----কুমারী মেয়েদের রক্ষা করাই কুমারী পূজার মূল উদ্দেশ্য-----
লেখক- রূপেশ সামন্ত
কুমারী পূজা দুর্গোৎসবের এক বর্ণাট্য অনুষ্ঠান পর্ব। বিশেষত কুমারীকে দেবী দুর্গার পার্থিব প্রতিনিধি হিসেবে পূজা করা হয়ে থাকে।
-----কুমারী পূজা কি?----
কোন কুমারী মেয়েকে দেবী দুর্গার সামনে মাতৃভাবে পূজা করাকে কুমারী পূজা বলে। দুর্গাপূজার মহাষ্টমী পূজার শেষে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। আবার কোথাও কোথাও নবমীতেও কুমারী পূজা হয়।
-----পৌরাণিক আঙ্গিক----
একদা কোলাসুর স্বর্গ-মর্ত্য অধিকার করে নিয়েছিল। দেবগন বিপন্ন হয়ে পড়েন। তাঁরা মহাকালীর শরণাপন্ন হন। তখন দেবী পুনর্জন্মে কুমারীরূপে আসেন এবং কোলাসুরকে বধ করেন। তখন থেকেই মর্ত্যে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়। লেখক- রূপেশ সামন্ত
----পূজার ‘কুমারী’ হওয়ার যোগ্যতা----
কুমারী পূজার জন্য মেয়েকে ষোল বছরের কম বয়সী হতে হবে। অবশ্যই মেয়েকে অরজঃস্বলা হতে হবে। জাতি, ধর্ম বা বর্ণ নির্বিশেষে যে কোন কুমারী মেয়েই কুমারী পূজার যোগ্য হতে পারে। বেশ্যাকুল জাতির কন্যাও কুমারী পূজার ‘কুমারী’ হতে পারে। তবে আগের দিনে মূলত ব্রাহ্মণ কন্যাই পূজিত হত।
----অন্য কোথায় কুমারী পূজা?----
দূর্গা পূজার সময় ছাড়াও কালীপূজা, জগদ্ধাত্রীপূজা এবং অন্নপূর্ণা পূজা উপলক্ষে কুমারী পূজা হয়। এছাড়াও কামাখ্যা শক্তিক্ষেত্রেও কুমারী পূজার প্রচলন রয়েছে। লেখক- রূপেশ সামন্ত
----দার্শনিক তত্বের আলোকে পর্যালোচনা----
কুমারী কন্যা ভবিষ্যতের নারীর বীজাবস্থা মাত্র। বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড তিনটি শক্তির সমাহার- সৃষ্টি, স্থিতি ও লয়। এই তিনটি শক্তিই সুপ্ত অবস্থায় কুমারী কন্যার মধ্যে নিহিত রয়েছে। তাই কুমারী কন্যা ছাড়া তিনটি শক্তিই আধারহীন হয়ে পড়বে এবং বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডও অস্তিত্বহীন হবে। বর্তমানের কুমারী কন্যা, যে ভবিষ্যতের নারী, তাকে চোখের মনির মতো রক্ষা করতে হবে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই। সেই কারনেই দেবীভাব আরোপ করে কুমারী কন্যার সাধনা করা হয়। এক্ষেত্রে কুমারী কন্যা ভোগ্যা নয়, পূজ্যা। বৃহত্তর অর্থে নারীও ভোগ্যা নয়, এই বিষয়টিও প্রতিষ্ঠা করাও উদ্দেশ্য। এ ভাবনায় ভাবিত হওয়ার মাধ্যমে আমরা রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকে নিজের স্ত্রীকে ষোড়শীজ্ঞানে পূজা করতে দেখেছি। একজন নারীর শৈশবে রক্ষাকর্তা বাবা-মা, যৌবনে রক্ষাকর্তা স্বামী ও বৃদ্ধাবস্থায় রক্ষকর্তা সন্তান। কিন্তু কন্যাবস্থায় সে অত্যন্ত দুর্বল ও বোধহীন হয়। সংসারে ব্যস্ত মা বা অর্থ উপার্জনে ব্যস্ত বাবার পক্ষে কন্যাসন্তানকে রক্ষা করা সম্ভব নয়। তাই সে সবচেয়ে অরক্ষিতও হয়। সেই কারনে কুমারী পূজার মাধ্যমে কন্যাকে দেবীভাবে ও শ্রদ্ধাসনে বসানো হয়েছে। ভবিষ্যতের নারীকে রক্ষা করাই উদ্দেশ্য। আবার জাতি, ধর্ম বা বর্ণ নির্বিশেষে যে কোন কুমারী মেয়েকেই কুমারী পূজার যোগ্যতা দানের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতির দিকটিও তুলে ধরা হয়েছে। সর্বোপরি কুমারী পূজা মানবাতাবাদী ধর্মাচরন বলেই আমার মনে হয়েছে। লেখক- রূপেশ সামন্ত। ছবি সৌজন্য- বকুল ফুল
তথ্য সূত্র- কুমারী পূজা প্রয়োগ, দেবী পুরান, উইকিপিডিয়া।
লেখক- রূপেশ সামন্ত
কুমারী পূজা দুর্গোৎসবের এক বর্ণাট্য অনুষ্ঠান পর্ব। বিশেষত কুমারীকে দেবী দুর্গার পার্থিব প্রতিনিধি হিসেবে পূজা করা হয়ে থাকে।
-----কুমারী পূজা কি?----
কোন কুমারী মেয়েকে দেবী দুর্গার সামনে মাতৃভাবে পূজা করাকে কুমারী পূজা বলে। দুর্গাপূজার মহাষ্টমী পূজার শেষে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। আবার কোথাও কোথাও নবমীতেও কুমারী পূজা হয়।
-----পৌরাণিক আঙ্গিক----
একদা কোলাসুর স্বর্গ-মর্ত্য অধিকার করে নিয়েছিল। দেবগন বিপন্ন হয়ে পড়েন। তাঁরা মহাকালীর শরণাপন্ন হন। তখন দেবী পুনর্জন্মে কুমারীরূপে আসেন এবং কোলাসুরকে বধ করেন। তখন থেকেই মর্ত্যে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়। লেখক- রূপেশ সামন্ত
----পূজার ‘কুমারী’ হওয়ার যোগ্যতা----
কুমারী পূজার জন্য মেয়েকে ষোল বছরের কম বয়সী হতে হবে। অবশ্যই মেয়েকে অরজঃস্বলা হতে হবে। জাতি, ধর্ম বা বর্ণ নির্বিশেষে যে কোন কুমারী মেয়েই কুমারী পূজার যোগ্য হতে পারে। বেশ্যাকুল জাতির কন্যাও কুমারী পূজার ‘কুমারী’ হতে পারে। তবে আগের দিনে মূলত ব্রাহ্মণ কন্যাই পূজিত হত।
----অন্য কোথায় কুমারী পূজা?----
দূর্গা পূজার সময় ছাড়াও কালীপূজা, জগদ্ধাত্রীপূজা এবং অন্নপূর্ণা পূজা উপলক্ষে কুমারী পূজা হয়। এছাড়াও কামাখ্যা শক্তিক্ষেত্রেও কুমারী পূজার প্রচলন রয়েছে। লেখক- রূপেশ সামন্ত
----দার্শনিক তত্বের আলোকে পর্যালোচনা----
কুমারী কন্যা ভবিষ্যতের নারীর বীজাবস্থা মাত্র। বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড তিনটি শক্তির সমাহার- সৃষ্টি, স্থিতি ও লয়। এই তিনটি শক্তিই সুপ্ত অবস্থায় কুমারী কন্যার মধ্যে নিহিত রয়েছে। তাই কুমারী কন্যা ছাড়া তিনটি শক্তিই আধারহীন হয়ে পড়বে এবং বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডও অস্তিত্বহীন হবে। বর্তমানের কুমারী কন্যা, যে ভবিষ্যতের নারী, তাকে চোখের মনির মতো রক্ষা করতে হবে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই। সেই কারনেই দেবীভাব আরোপ করে কুমারী কন্যার সাধনা করা হয়। এক্ষেত্রে কুমারী কন্যা ভোগ্যা নয়, পূজ্যা। বৃহত্তর অর্থে নারীও ভোগ্যা নয়, এই বিষয়টিও প্রতিষ্ঠা করাও উদ্দেশ্য। এ ভাবনায় ভাবিত হওয়ার মাধ্যমে আমরা রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকে নিজের স্ত্রীকে ষোড়শীজ্ঞানে পূজা করতে দেখেছি। একজন নারীর শৈশবে রক্ষাকর্তা বাবা-মা, যৌবনে রক্ষাকর্তা স্বামী ও বৃদ্ধাবস্থায় রক্ষকর্তা সন্তান। কিন্তু কন্যাবস্থায় সে অত্যন্ত দুর্বল ও বোধহীন হয়। সংসারে ব্যস্ত মা বা অর্থ উপার্জনে ব্যস্ত বাবার পক্ষে কন্যাসন্তানকে রক্ষা করা সম্ভব নয়। তাই সে সবচেয়ে অরক্ষিতও হয়। সেই কারনে কুমারী পূজার মাধ্যমে কন্যাকে দেবীভাবে ও শ্রদ্ধাসনে বসানো হয়েছে। ভবিষ্যতের নারীকে রক্ষা করাই উদ্দেশ্য। আবার জাতি, ধর্ম বা বর্ণ নির্বিশেষে যে কোন কুমারী মেয়েকেই কুমারী পূজার যোগ্যতা দানের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতির দিকটিও তুলে ধরা হয়েছে। সর্বোপরি কুমারী পূজা মানবাতাবাদী ধর্মাচরন বলেই আমার মনে হয়েছে। লেখক- রূপেশ সামন্ত। ছবি সৌজন্য- বকুল ফুল
তথ্য সূত্র- কুমারী পূজা প্রয়োগ, দেবী পুরান, উইকিপিডিয়া।
No comments:
Post a Comment