Popular Posts
-
-----মাহে রমযান----- শ্রী রূপেশ কুমার সামন্ত/ রমযানের শান্তির বানী, নব-প্রভাতের বানী অনুরণিত হয় কাজী নজরুল ইসলামের লেখনীতেও। ‘...
-
-------- ------ ---- অপরূপা দীঘার হাতছানি ---- ------ -------- শ্রী রূপেশ কুমার সামন্ত/ ০২.০৬.১৮ / ভ্রমন কাহিনী টমাস উইলসন...
-
২৫ শে বৈশাখ রবীন্দ্র জন্ম-জয়ন্তীতে শ্রদ্ধার্ঘ… -----চলো যাই শান্তিনিকেতনের তরুবীথি তলে----- ছবি ও লেখা -শ্রী রূপেশ কুমার সাম...
-
DAYBREAK Henry Wadsworth Longfellow 1. Give the substance of the poem, ‘Daybreak’. At dawn, a wind rises from...
-
-----মূল রামায়ণে দুর্গা পূজার অস্তিত্বই নেই---- - লেখক- শ্রী রূপেশ সামন্ত [‘অকালবোধন’ কেন? ‘বারোয়ারী’ পূজা বলে কেন? ‘মহাভারতে’ কি...
-
My Own True Family Ted Hughes 1. When did the poet come twice awake? Ans. The poet came twice awake when the old woman ...
-
তৃণমূল নেতা কুরবান শা'কে গুলি করে হত্যা পাঁশকুড়া, অক্টোবর ৮ঃ পাঁশকুড়ার মাইশোরায় নিজের অফিসেই গুলি করে হত্যা করা হল তৃনমুল কংগ্রেসে...
-
ASLEEP IN THE VALLEY Arthur Rimbaud How does the picture of the sold...
-
WARNING! PARTHENIUM WEEDS Written & Pic by - Rupesh Kumar Samanta / 28.04.2018 You lovingly gifts a bunch of white Part...
-
LEELA'S FRIEND R. K. Narayan Analytical/ Descriptive Type Questions- Marks 5 List the ways in which Sid...
Friday, 9 April 2021
গঙ্গামাড়ো তলার গঙ্গার বিগ্রহই হল গঙ্গার একমাত্র প্রাচীন দারুবিগ্রহ- Ganga
গঙ্গামাড়ো তলার গঙ্গার বিগ্রহই হল গঙ্গার একমাত্র প্রাচীন দারুবিগ্রহ
©রূপেশ সামন্ত
হাজারো মানুষের ভীড়ে ছাপিয়ে যায় পলাশপাই নদীর দু’কুল। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর-২ ব্লকের গৌরার গঙ্গামাড়ো তলার গঙ্গাপূজা ও বারুনী স্নান নিয়ে জড়িয়ে আছে বহু লোককথা ও ইতিহাস। উৎসবের সময়টা হল চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী। এই সময় গঙ্গাপূজা উপলক্ষ্যে সপ্তাহ ব্যাপী চলে বিরাট মেলা। প্রায় ২৫০ বছরের প্রাচীন মেলায় আজও দূর-দুরান্তের বহু ধর্মপ্রাণ মানুষের সমাগমই প্রমান করে তার সূদুরপ্রসারী মাহাত্ম্য। মেলাটি গঙ্গা-বারুনি মেলা নামে পরিচিত।
আসলে মেলার কেন্দ্রে রয়েছে প্রাচীন গঙ্গাদেবী ও তাঁর মাহাত্ম্য। এই দেবীকে নিয়ে প্রচলিত রয়েছে টান-টান উত্তেজনাপূর্ণ এক লোককথা। গৌরার এই গঙ্গা মন্দিরের স্থানটি গঙ্গামাড়ো তলা নামে পরিচিত। প্রায় ২৫০ বছর পূর্বে পলাশপাইয়ের তীরের এই স্থানটি ছিল শ্মশান। চারিদিকে ছিল ঘন জঙ্গল। একদিন এক শাঁখারী শাঁখা বিক্রি করছিল এই এলাকায়। একটি মেয়ে এসে শাঁখারীর কাছে একজোড়া শাঁখা কিনল। শাঁখারী শাঁখার মূল্য চাইলে মেয়েটি বলে, “আমার বাবার নাম রামকিশোর প্রামানিক। আমি এখন নদীতে স্নান করতে যাচ্ছি। বাবার কাছে শাঁখার মূল্য নিয়ে নেবে। টাকা বাড়ির কুলুঙ্গিতে রাখা আছে”। রামকিশোর প্রামানিক ছিলেন এই এলাকার একজন ধনী ব্যবসায়ী এবং নিঃসন্তান। শাঁখারী মেয়েটির কথামতো রামকিশোর বাবুর বাড়িতে উপস্থিত হলেন এবং শাঁখার মূল্য চাইলেন। তখন রামকিশোর বাবু ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন এবং বললেন, “আমার কোন কন্যাসন্তান নেই। আমার সঙ্গে প্রতারনা করতে এসেছো”? শাঁখারী হতাশ হলেন। এরপর কৌতুহলভরে রামকিশোর বাবু মেয়েটিকে দেখতে চাইলেন। শাঁখারী তাঁকে পলাশপাই নদীর তীরে নিয়ে গেলেন। কিন্তু কাউকে দেখতে পেলেন না। রামকিশোর বাবু শাঁখারীকে ভৎর্সনা করলেন। শাঁখারী ক্ষমা চাইলেন। এমন সময় নদীঘাট থেকে হঠাৎ এক নারীকণ্ঠ শুনতে পেলেন। নদীর দিকে তাকিয়ে দুজনেই বিস্ময়ে আবিষ্ট হয়ে গেলেন। অসীম জ্যোতিতে নদীর জল থেকে উপরে উঠে এসেছে এক নারীর দুটি দণ্ডায়মান হাত। সেই হাতে পরিধান করা রয়েছে শাঁখারীর সেই দুটি শাঁখা। নারীকণ্ঠে উচ্চারিত হল, ‘বাবা, আমি গঙ্গা। তোমার মেয়ে। আমিই শাঁখা কিনেছি। বাড়ির কুলুঙ্গিতে টাকা রাখা রয়েছে। শাঁখারীকে দিয়ে দিও’। তারপর নিমেষেই সব অদৃশ্য হয়ে গেল। রামকিশোর বাবু ছুটলেন বাড়িতে। দেখলেন কুলুঙ্গিতে সত্যিই শাঁখার মূল্য রয়েছে। রামকিশোর বাবু নিজে কখনোই এইভাবে কুলুঙ্গিতে টাকা রাখেন না। এই অলৌকিক কাণ্ডে তিনি বাহ্যত বিমূঢ় হয়ে গেলেন। পরে সেই মূল্য তিনি শাঁখারীকে দিয়ে দিলেন।
ঘটনার আকস্মিকতায় রামকিশোর বাবু বিহ্বল হয়ে রইলেন। সেই রাতে স্বপ্নাদিষ্ট হলেন যে, গঙ্গা তাঁর কন্যরূপে এখানে অধিষ্ঠ হতে চান এবং ভোরের বেলা পলাশপাইয়ের জলে গঙ্গা ভেসে আসবেন। রামকিশোর বাবু ভোরবেলা ছুটলেন পলাশপাইয়ের তীরে। পলাশপাইয়ের জলে ভেসে এল এক নিমকাঠের দারুবিগ্রহ। সেই দারুবিগ্রহটি ছিল মকরের উপর দণ্ডায়মান গঙ্গার বিগ্রহ। রামকিশোর বাবু সেই বিগ্রহ পলাশপাইয়ের তীরে প্রতিষ্ঠা করলেন। পরে পঞ্চরত্ন মন্দির স্থাপন করলেন। গঙ্গার বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার দিনটি ছিল মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী। সেই থেকে প্রতিবছর মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে উদযাপিত হয় গঙ্গার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও বারুনী স্নান পর্ব। এখানে বিবাহিত মহিলারা স্বামীর মঙ্গল কামনায় নতুন শাঁখা পরে পলাশপাইয়ের জলে ‘বারুনী স্নান’ করে। আর বসে বিরাট মেলা।
চৈত্র মাসকে মধুমাস বলাহয়। তাই চৈত্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশীকে মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী বলা হয়। এই চৈত্র বা মধু মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশীতে শতভিষা নক্ষত্রের যোগ হলে, তাকে বারুণী তিথি বলে। শতভিষা নক্ষত্রের আরেক নাম বরুণ। শতভিষা নক্ষত্র তথা বরুণ নক্ষত্রের নামানুসারে এই যোগকে বারুণীযোগ বলা হয়। এই সময় গঙ্গাস্নানে বহুশত সূর্যগ্রহন জনিত গঙ্গাস্নানের সমান ফল লাভ হয়। বারুণী হল গঙ্গা স্নানের একটি বিশেষ যোগ। গঙ্গামাড়ো তলার পলাশপাই নদীটি পূন্যার্থীদের কাছে গঙ্গারই প্রতিরূপ। তাই মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তথা বারুনী তিথিতে এখানে গঙ্গাপূজা উপলক্ষ্যে পূন্যার্থীরা মনস্কামনা পূরণে বারুনী স্নান করে। সেই উপলক্ষ্যে আয়োজিত হয় বিরাট মেলা।
গঙ্গার প্রাচীন ‘পঞ্চরত্ন’ মন্দিরটি এখন আর নেই। কালের গর্ভে ধ্বংস হয়ে গেছে। সেই প্রাচীন মন্দিরের ফলকে লেখা ছিল, ‘সন ১১/৮৭ সাল/ বিস্তিথ ২১/ আঘ্রান’। সুতরাং ফলক অনুসারে প্রাচীন মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৭৮০ খ্রিষ্টাব্দে। বর্তমানে নতুন মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মন্দিরের সামনে রয়েছে রামকিশোর প্রামানিকের স্মৃতি ফলক। মন্দিরে প্রাচীন দারুবিগ্রহটিই রয়েছে। দারুবিগ্রহটি নিমকাঠের তৈরি। মন্দিরের পুরোহিত শক্তিশংকর চক্রবর্তীর মতে, এই বিগ্রহটি রামকিশোর প্রামানিক প্রতিষ্ঠিত সেই প্রাচীন দারুবিগ্রহ। তবে দারুবিগ্রহটি যে খুবই প্রাচীন, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। বহু বছর অন্তর বিগ্রহের ‘অঙ্গরাগ’ হয়। এই অঙ্গরাগের মধ্য দিয়ে বিগ্রহটিকে নবরূপে সজ্জিত করা হয়। যতদূর জানা যায়, গঙ্গার এইরূপ দারুবিগ্রহ পশ্চিমবঙ্গের আর কোথাও নেই। গঙ্গার অদ্বিতীয় দারুবিগ্রহের সাথে অনন্য মাহাত্ম্য গঙ্গামাড়ো তলার গঙ্গাকে করে তুলেছে পূন্যার্থীদের গন্তব্যের অন্যতম কেন্দ্র।
Labels:
History & Tradition
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment