----- কুরবানির ঈদ - ‘‘তুই
আপনাকে আজ বিলিয়ে দে…’’ -----
@লেখক- রূপেশ সামন্ত/
ঈদুল
আযহা বা কুরবানির ঈদ ইসলাম
ধর্মাবলম্বিদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব গুলির মধ্যে একটি। এই উৎসব ত্যাগের উৎসব। এই উৎসবটি কুরবানির ঈদ বা ঈদুজ্জোহাও নামে পরিচিত।
ঈদুল আযহা মূলত আরবী অনুবাদ।
-----পালনীয়
পদ্ধতি----
এ দিনটিতে প্রথমে মুসলমান ধর্মালম্বীরা
ফযরের নামাযের পর ঈদগাহে গিয়ে প্রার্থনা করে। এরপর নিজ নিজ আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী উট, গরু, দুম্বা কিংবা ছাগল সৃষ্টিকর্তার নামে কোরবানি
করে। ইসলাম মতে, যার কাছে ঈদের দিন প্রত্যূষে সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে
বায়ান্ন তোলা রৌপ্য বা সমপরিমাণ সম্পদ আছে তাঁর ঈদুল আযহা উপলক্ষে পশু কুরবানি
করা কর্তব্য।
-----মূল প্রতিপাদ্য বিষয়----
এই উৎসবের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হল ত্যাগ
করা।
-----উৎসবের ইতিহাস----
ধর্মীয়
তথ্যসূত্র অনুসারে, আজ
থেকে পাঁচ হাজার বছর আগে হজরত ইব্রাহিম (আ.) কে স্বপ্নে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি কুরবানি করার
নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ইব্রাহীম স্বপ্নে আদেশ পেয়ে ১০টি উট কোরবানি করলেন।
পুনরায় তিনি আবারও একই স্বপ্ন দেখলেন। এরপর ইব্রাহীম আবারও ১০০টি উট কোরবানি করলেন।
পুনরায় তিনি আবারও একই স্বপ্ন দেখলেন। তখন তিনি ভাবলেন, তার কাছে এই মুহূর্তে প্রিয় পুত্র ইসমাইল
(আ.) ছাড়া আর কোনো প্রিয় বস্তু নেই। তখন তিনি পুত্রকে কোরবানির দেওয়ার প্রস্তুতি
নিলেন। এই সময় শয়তান আল্লাহর আদেশ পালন করা থেকে ইব্রাহীমকে বিরত করার জন্য লোভ
দেখিয়েছিল। কিন্তু ইব্রাহীম শয়তানকে পাথর ছুঁড়ে মেরেছিলেন। শয়তানকে
প্রত্যাখ্যানের স্মরণেই, হজ্জের সময় প্রতীকী স্তম্ভে পাথর ছুঁড়ে
মারা হয়। এরপর ইব্রাহীম আরাফাত পর্বতের উপর তার প্রিয় পুত্রকে কোরবানি দেওয়ার
চেষ্টা করতেই তিনি দেখেন তাঁর পুত্রের পরিবর্তে একটি প্রাণী কোরবানি হয়েছে। এই
সর্বোচ্চ ত্যাগের
মহিমাকে তুলে ধরাই ঈদে পশু
কোরবানির প্রধান মর্মবাণী।
-----তাৎপর্য-----
নিজের সম্পদের একটি অংশ বিলিয়ে দেয়ার এক উজ্জ্বল
দৃষ্টান্তের
নাম কোরবানি। বস্তুত কোরবানির ঈদ আত্মশুদ্ধি ও আত্মত্যাগের
এক সুমহান বার্তা নিয়ে আসে। কোরবানির
ঈদ এর শিক্ষায় উজ্জীবিত হলে সব পাপ, বঞ্চনা, সামাজিক অসাম্য ও
সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি হীনতা থেকে মানব জাতিকে রক্ষা করা যাবে। কোরবানির ঈদে ত্যাগের মধ্যেই
লুকিয়ে রয়েছে সহনশীলতার বীজ। আর সেই সহনশীলতাই পারে সম্প্রীতির অঙ্কুরোদ্গম ঘটাতে।
তবেই পৃথিবীতে জন্মলাভ করবে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির সুসংহত বৃক্ষ। আর তখনই ঝরে
পড়বে বিশ্বজিনীন মানবতাবাদের শান্তিধারা। সেখানেই কোরবানির ঈদের স্বার্থকতা।
@লেখক- রূপেশ সামন্ত/
২২.০৮.২০১৮
No comments:
Post a Comment