সেদিন ভারত ছিল প্রথম রাস্ট্র, যারা বাংলাদেশকে প্রথম স্বাধীন রাস্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছিল। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাংলাদেশের মানুষের আত্মপরিচয় রক্ষার একটি রক্তাক্ত সংগ্রাম। সেদিন বাংলাদেশের অবর্ণনীয় বিপর্যয়ে পাশে দাঁড়িয়ে ছিল একমাত্র ভারত।
সেদিন বাংলাদেশের প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ শহীদ হন (সরকারি হিসাব)।
২ থেকে ৪ লক্ষ নারী পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ধর্ষণের শিকার হন।
১ কোটিরও বেশি মানুষ ভারতে আশ্রয় নেয়, যারা উদ্বাস্তু জীবন যাপন করে দীর্ঘদিন।
শিল্পকারখানা, রেলপথ, সেতু, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অধিকাংশ অবকাঠামো পূর্ব-পরিকল্পিত ভাবে ধ্বংস করে দেয় পাকিস্তান, যাতে স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনে বেকায়দায় পড়ে।
বুদ্ধিজীবী নিধনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ভবিষ্যতের নেতৃত্বশূন্য করার চেষ্টা করা হয়।
সেদিন বাংলাদেশের বিপর্যয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভারত লড়াই করেছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানের পরাজয় সূচিত হয়। ভারতের হাতে বন্দী হয় পাকিস্তানের ৯৩ হাজার সৈন্য। বাংলাদেশকে স্বাধীন রাস্ট্র রূপে ঘোষণা করা হয়।
কিছু নিন্দুক এখনও নির্লজ্জ ভাবে বলে চলেছে, সেদিন ভারত নাকি নিজেদের স্বার্থেই বাংলাদেশের হয়ে লড়াই করেছে। তাহলে প্রশ্ন একটাই, সেদিন পাকিদের দ্বারা চার লাখ বাংলাদেশি মা-বোনের ধর্ষন আর ৩০ লাখ নরহত্যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কোন স্বার্থ ছিল না?
Gary J. Bass এর লেখা একবার পড়লেই পাকিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের লোম খাড়া হয়ে যাওয়া উচিৎ। তাঁর লেখা “The Blood Telegram” গ্রন্থে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর যৌন সহিংসতার মাত্রা বর্ণনায় বলা হয়েছে যে: “Some women were raped dozens of times, even as much as 70 or 80 times...”
সেদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পরও বাংলাদেশে বসেই পাকিস্তান পন্থী মিডিয়াগুলো রেডিওয় নির্লজ্জ ভাবে প্রচার করে যাচ্ছিল, পাকিস্তান নাকি একের পর এক ভারতের কলকাতা, আসাম, ত্রিপুরা দখল করে নিচ্ছে! বড্ড হাস্যকর।
পাকিস্তান পন্থী মিডিয়াও সেদিন পাকিস্তানকে বাঁচাতে পারেনি। সেদিন পাকিস্তানের জেনারেল নিয়াজি ভারতের জেনারেল জগজিত সিং অরোরার সামনে মাথা নত করে আত্মসমর্পনের দলিলে স্বাক্ষর করেছিল। নিজেদের মা-বোনেদের ধর্ষণকারী, গনহত্যাকারী পাকিদের পক্ষ নেওয়ার পূর্বে একটু অন্তত লজ্জিত হও, বাংলাদেশী মিডিয়া (কিছু)।
© রূপেশ সামন্ত
No comments:
Post a Comment