-----বিশ্বকাপ ফুটবলের ট্রফির বিবর্তন-----
রূপেশ
সামন্ত/
০৬.০৬.২০১৮
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফুটবল
বিশ্বকাপ ট্রফিটি ছিলো বিশ্বকাপ জয়ী ইতালী দলের কাছে। নাৎসিদের
হাত থেকে ট্রফিটিকে রক্ষা করার জন্য ফিফার সহ-সভাপতি অট্টোরিনো অতি গোপনে এটিকে একটি ব্যাংকের লকার থেকে নিয়ে রোমে যান। প্রথমে এটিকে একটি জুতার বাক্সের ভেতরে ভরেন। তারপর নিজের বিছানার নিচে লুকিয়ে
রাখেন।
ইংল্যান্ডে ১৯৬৬ সালের
বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। টুর্ণামেন্টের ওয়েস্টমিনিস্টার
সেন্ট্রাল হলে বিশ্বকাপের একটি উম্মুক্ত প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। কিন্তু সকলের
চোখে ধূলো দিয়ে ট্রফিটি চুরি হয়ে যায়। মাত্র সাতদিন পর খবরের কাগজে
মোড়া অবস্থায় এটি লন্ডনের নরউড অঞ্চলের একটি বাগানের পার্শ্বস্থ এলাকা থেকে উদ্ধার হয়। পিকেল্স নামক একটি কুকুর এটির সন্ধান দেয়।
ব্রাজিল ১৯৭০ সালে তৃতীয়
বারের মতো বিশ্বকাপ জয় করার পর এটি তাদেরকে স্থায়ীভাবে দিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু ১৯ ডিসেম্বর ১৯৮৩ সালে কাপটি পুনরায় চুরি হয়ে যায়। ট্রফিটি আজও উদ্ধার
হয়নি।
-----জুলে রিমে ট্রফি-----
১৯৩০ সালে বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হয়। ১৯৩০ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত বিজয়ী
দলকে
‘জুলে রিমে ট্রফি’ প্রদান করা হত। প্রথমে
এটি ‘ভিক্টরি’ নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু সকলের কাছে এটি শুধু ‘বিশ্বকাপ’ নামেই প্রথমে পরিচিত ছিল।
পরে ১৯৪৬ সালে প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজনকারী ফিফা প্রেসিডেন্ট জুলে রিমের নামে এটির নামকরণ করা হয়। ১৯৭০ সালে ব্রাজিল মোট তিন বার বিশ্বকাপ জিতলে তাদেরকে
স্থায়ীভাবে ট্রফিটি দিয়ে দেওয়া হয়।
এই ট্রফিটির নক্সা করেছেন আবেল লাফলিয়ার। এটি গোল্ড প্লেটেড স্টারলিং সিলভার দিয়ে
তৈরী। এটির ওজন ছিল ৩.৮ কেজি।
-----ফিফা বিশ্বকাপ ট্রফি----
১৯৭০ সালের পর আরেকটি নতুন ট্রফি তৈরী করা হয়। এই ট্রফির নাম দেওয়া হয় ‘ফিফা বিশ্বকাপ ট্রফি’। ইতালিয় নকশাকার সিলভিও
গাজ্জানিগার
তৈরী নমুনা ‘ফিফা বিশ্বকাপ ট্রফি’ হিসেবে গৃহীত হয়। এই
নতুন ট্রফিটির উচ্চতা ৩৬ সেন্টিমিটার, ১৮ ক্যারেট সোনা দিয়ে তৈরী ও ওজন ৬,১৭৫ গ্রাম। এর ভিত্তি দু’স্তরের মূল্যবান ম্যালাকাইট দিয়ে তৈরী। ভিত্তির নিচের দিকে ১৯৭৪ থেকে আজ পর্যন্ত সকল
বিশ্বকাপজয়ীর
নাম গ্রথিত করা আছে। এই নতুন ট্রফি বিজয়ী দেশকে
স্থায়ীভাবে এখন দেওয়া হয় না। বিশ্বকাপ জয়ী দল পরবর্তী বিশকাপ পর্যন্ত ট্রফিটি তাদের কাছে রাখতে পারে। এরপর তাদেরকে সোনার প্রলেপ দেয়া
নকল বিশ্বকাপ
দেয়া হয়।
রূপেশ সামন্ত/ ০৬.০৬.২০১৮
No comments:
Post a Comment