সমস্ত পরিযায়ী প্রান্তিক শ্রমিকদের ঘরে ফেরাটা ডেকে আনবে আরও বড় আর্থিক বিপর্যয়ঃঃ
প্রশ্ন-১/ পরিযায়ী প্রান্তিক শ্রেণির শ্রমিক ফিরছে কেন?
উত্তরঃ তারা কর্মস্থলে খাবার পাচ্ছে না। কাজ নেই। তাই ফিরছে।
প্রশ্ন-২/ তারা বাড়ি ফিরে খাবার পাবে?
উত্তরঃ কোন নিশ্চয়তা নেই। প্রান্তিক শ্রেণির শ্রমিকরা অধিকাংশই ভূমিহীন ও প্রায় গৃহহীন। কেউ বলতে পারেন রেশন ব্যবস্থা আছে। রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমেই খাবার পাবে।
প্রশ্ন-৩/ রেশন ব্যবস্থা কর্মস্থলে নয় কেন?
উত্তরঃ প্রশ্ন সেটাই। রেশন ব্যবস্থা সাময়িক ভাবে কর্মস্থলেই করা যেত।
প্রশ্ন-৪/ খাবার নিশ্চয়তা তাহলে কোথায়?
উত্তরঃ লক-ডাউন পিরিয়ডে স্বনির্ভর খাবারের ব্যবস্থা রেশনিং ছাড়া কোথাওই নেই। কর্মস্থলেও নেই। বাড়িতে ফিরেও নেই। বাড়িতে খাবারের সংস্থান ছিলনা বলেই দূরদেশে পাড়ি দিয়ে কাজ জুটিয়েছিল শ্রমিকরা।
প্রশ্ন-৫/ শ্রমিকরা বাড়ি ফেরায় কর্মস্থলে কি সমস্যা হবে?
উত্তরঃ পরে ফিরে গিয়ে আবার কাজ জোটানো কঠিন হবে। সেখানকার কাজের শৃঙ্খলটাই পরিবর্তণ হয়ে যাবে ততদিনে। সামগ্রিক ভাবে পুরো এলাকার আর্থ-সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে। একটি ছোট এলাকায় বহু কর্মপ্রার্থীর প্রবল চাপ তৈরি হবে। সৃষ্টি হবে আর্থিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা।
প্রশ্ন-৬/ শ্রমিকরা বাড়ি ফেরায় বাড়ি-এলাকায় কি সমস্যা হবে?
উত্তরঃ শমিকদের বাড়ি এলাকায় একটি প্রবহমান কাজের শৃঙ্খল রয়েছে। সেই শৃঙ্খল ভেঙে কাজে যোগ দেওয়া খুব কঠিন।
প্রশ্ন-৭/ শ্রমিকরা কর্মস্থলে থেকে কি করতে পারতেন?
উত্তরঃ সাময়িক ভাবে রেশনের দাবি জানাতে পারতো। আর কর্মস্থলে আগের কাজ ফিরে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে পারতেন বা সেখানেই সম্পৃক্ত থেকে চালিয়ে যেতে পারতেন। সেটা শ্রমিকরাই সবচেয়ে ভালো বোঝেন, কি করা উচিৎ।
প্রশ্ন-৮/ শ্রমিকরা বাড়ি ফেরায় দেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে প্রভাব কি?
উত্তরঃ গোটা দেশেই ভেঙে পড়বে আর্থ-সামাজিক ভারসাম্য। লক-ডাউন কবে উঠবে ঠিক নেই। কবে আর্থিক স্থিতিশীলতা আসবে ঠিক নেই। বেশিরভাব শ্রমিকের সামান্য জমিটুকুও নেই। কাজ ও খাদ্যের জন্য লড়াই শুরু হয়ে যাবে। আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে পারে। অসামাজিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাবে।
ধরুন, একটি গ্রামে ১০০০ মানুষ বাস করেন। সেখানে আরও ১০০ মানুষ ঢুকলে সেই গ্রামের আর্থ-সামাজিক বর্তমান পরিকাঠামো কি পারবে সেই চাপ নিতে? কাজ ও খাদ্যের যোগান কি ভাবে হবে? ঐ শ্রমিকরা যদি আর আগের কর্মস্থলে ফিরতে না পারে, তাহলে কি হবে?
প্রশ্ন-৯ঃ শ্রমিকদের বাড়ি ফেরা নিয়ে রাজনীতি কেমন হচ্ছে?
উত্তরঃ পুরোটাই রাজনীতি হচ্ছে। বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলই শ্রমিক দরদী সাজার চেষ্টা করছে। সমস্যার গোড়ার কথা কেউ বলছে না। সবাই সাময়িক উপশমের কথা বলছে। ফলে আগামী দিনে বড় আর্থ-সামাজিক বিপর্যয় আসতে চলেছে।
প্রশ্ন-৯/ তাহলে উপায় কি?
উত্তরঃ পারিবারিক ও চিকিৎসা জনিত প্রয়োজন ছাড়া বাড়িতে ফিরে আদপে লাভ কিছুই নেই। কোন সুরাহা হবে। আদপে সেই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক পরিকাঠামোয় ব্যাপক চাপ তৈরি হবে। বরং স্বস্থানে থেকেই লড়াই করাটা অনেক যুক্তিযুক্ত। সবাই নিজের নিজের স্থানে থাকলেই আগামী দিনের কঠিন চ্যালেঞ্জ সামলানো অনেক সহজ হবে। অসংগঠিত শ্রমিকদের ছোট ছোট সংগঠিত রূপ দিতে হবে। তাদের সাথেই আলোচনার মাধ্যমে তাদের কর্মদক্ষতা অনুযায়ী করোনা কেন্দ্রিক সমস্ত সুরক্ষা বিধি মেনে নিত্য প্রয়োজনীয় পরিষেবা ক্ষেত্রে কাজে লাগানো যেতে পারে। সেই সঙ্গে পূর্বের কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখাটাও জরুরী। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে রেশনিং এর ব্যবস্থাও করতে হবে। এই সমস্ত কাজর পরিচালনা স্থানীয় প্রশাসন দ্বারা করতে হবে।
[কপিরাইট- লেখক কর্তৃক সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই প্রবন্ধের আংশিক বা সম্পূর্ণ কপি করা বেয়াইনি।]
লেখক- রূপেশ সামন্ত
প্রশ্ন-১/ পরিযায়ী প্রান্তিক শ্রেণির শ্রমিক ফিরছে কেন?
উত্তরঃ তারা কর্মস্থলে খাবার পাচ্ছে না। কাজ নেই। তাই ফিরছে।
প্রশ্ন-২/ তারা বাড়ি ফিরে খাবার পাবে?
উত্তরঃ কোন নিশ্চয়তা নেই। প্রান্তিক শ্রেণির শ্রমিকরা অধিকাংশই ভূমিহীন ও প্রায় গৃহহীন। কেউ বলতে পারেন রেশন ব্যবস্থা আছে। রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমেই খাবার পাবে।
প্রশ্ন-৩/ রেশন ব্যবস্থা কর্মস্থলে নয় কেন?
উত্তরঃ প্রশ্ন সেটাই। রেশন ব্যবস্থা সাময়িক ভাবে কর্মস্থলেই করা যেত।
প্রশ্ন-৪/ খাবার নিশ্চয়তা তাহলে কোথায়?
উত্তরঃ লক-ডাউন পিরিয়ডে স্বনির্ভর খাবারের ব্যবস্থা রেশনিং ছাড়া কোথাওই নেই। কর্মস্থলেও নেই। বাড়িতে ফিরেও নেই। বাড়িতে খাবারের সংস্থান ছিলনা বলেই দূরদেশে পাড়ি দিয়ে কাজ জুটিয়েছিল শ্রমিকরা।
প্রশ্ন-৫/ শ্রমিকরা বাড়ি ফেরায় কর্মস্থলে কি সমস্যা হবে?
উত্তরঃ পরে ফিরে গিয়ে আবার কাজ জোটানো কঠিন হবে। সেখানকার কাজের শৃঙ্খলটাই পরিবর্তণ হয়ে যাবে ততদিনে। সামগ্রিক ভাবে পুরো এলাকার আর্থ-সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে। একটি ছোট এলাকায় বহু কর্মপ্রার্থীর প্রবল চাপ তৈরি হবে। সৃষ্টি হবে আর্থিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা।
প্রশ্ন-৬/ শ্রমিকরা বাড়ি ফেরায় বাড়ি-এলাকায় কি সমস্যা হবে?
উত্তরঃ শমিকদের বাড়ি এলাকায় একটি প্রবহমান কাজের শৃঙ্খল রয়েছে। সেই শৃঙ্খল ভেঙে কাজে যোগ দেওয়া খুব কঠিন।
প্রশ্ন-৭/ শ্রমিকরা কর্মস্থলে থেকে কি করতে পারতেন?
উত্তরঃ সাময়িক ভাবে রেশনের দাবি জানাতে পারতো। আর কর্মস্থলে আগের কাজ ফিরে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে পারতেন বা সেখানেই সম্পৃক্ত থেকে চালিয়ে যেতে পারতেন। সেটা শ্রমিকরাই সবচেয়ে ভালো বোঝেন, কি করা উচিৎ।
প্রশ্ন-৮/ শ্রমিকরা বাড়ি ফেরায় দেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে প্রভাব কি?
উত্তরঃ গোটা দেশেই ভেঙে পড়বে আর্থ-সামাজিক ভারসাম্য। লক-ডাউন কবে উঠবে ঠিক নেই। কবে আর্থিক স্থিতিশীলতা আসবে ঠিক নেই। বেশিরভাব শ্রমিকের সামান্য জমিটুকুও নেই। কাজ ও খাদ্যের জন্য লড়াই শুরু হয়ে যাবে। আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে পারে। অসামাজিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাবে।
ধরুন, একটি গ্রামে ১০০০ মানুষ বাস করেন। সেখানে আরও ১০০ মানুষ ঢুকলে সেই গ্রামের আর্থ-সামাজিক বর্তমান পরিকাঠামো কি পারবে সেই চাপ নিতে? কাজ ও খাদ্যের যোগান কি ভাবে হবে? ঐ শ্রমিকরা যদি আর আগের কর্মস্থলে ফিরতে না পারে, তাহলে কি হবে?
প্রশ্ন-৯ঃ শ্রমিকদের বাড়ি ফেরা নিয়ে রাজনীতি কেমন হচ্ছে?
উত্তরঃ পুরোটাই রাজনীতি হচ্ছে। বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলই শ্রমিক দরদী সাজার চেষ্টা করছে। সমস্যার গোড়ার কথা কেউ বলছে না। সবাই সাময়িক উপশমের কথা বলছে। ফলে আগামী দিনে বড় আর্থ-সামাজিক বিপর্যয় আসতে চলেছে।
প্রশ্ন-৯/ তাহলে উপায় কি?
উত্তরঃ পারিবারিক ও চিকিৎসা জনিত প্রয়োজন ছাড়া বাড়িতে ফিরে আদপে লাভ কিছুই নেই। কোন সুরাহা হবে। আদপে সেই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক পরিকাঠামোয় ব্যাপক চাপ তৈরি হবে। বরং স্বস্থানে থেকেই লড়াই করাটা অনেক যুক্তিযুক্ত। সবাই নিজের নিজের স্থানে থাকলেই আগামী দিনের কঠিন চ্যালেঞ্জ সামলানো অনেক সহজ হবে। অসংগঠিত শ্রমিকদের ছোট ছোট সংগঠিত রূপ দিতে হবে। তাদের সাথেই আলোচনার মাধ্যমে তাদের কর্মদক্ষতা অনুযায়ী করোনা কেন্দ্রিক সমস্ত সুরক্ষা বিধি মেনে নিত্য প্রয়োজনীয় পরিষেবা ক্ষেত্রে কাজে লাগানো যেতে পারে। সেই সঙ্গে পূর্বের কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখাটাও জরুরী। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে রেশনিং এর ব্যবস্থাও করতে হবে। এই সমস্ত কাজর পরিচালনা স্থানীয় প্রশাসন দ্বারা করতে হবে।
[কপিরাইট- লেখক কর্তৃক সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত। বিনা অনুমতিতে এই প্রবন্ধের আংশিক বা সম্পূর্ণ কপি করা বেয়াইনি।]
No comments:
Post a Comment