পাঁশকুড়ার চাঁপাডালির চক্রবর্তী পরিবারের দুর্গাপূজায় আবশ্যিক মাছের ঝোলের ভোগরান্না
©রূপেশ সামন্ত
বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী ও পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন ভূমি ও ভূমি রাজস্ব মন্ত্রী শ্যামাদাস ভট্টাচর্যের আদি বাসভূমি হল পাঁশকুড়ার চাঁপাডালি গ্রাম। পুরো ভট্টাচার্য পরিবারই একসময় পাঁশকুড়ার স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দান করেছিল। শ্যামাদাস বাবুর পিতা সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, মাতা ইন্দুমতি ভট্টাচার্য ও ভাই কালিদাস ভট্টাচার্য ছিলেন বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী। এছাড়াও এই চাঁপাডালি গ্রাম ঐতিহাসিক ভাবেও অত্যন্ত গূরুত্বপূর্ণ। এখানেই ১৫৭৩ খ্রিষ্টাব্দে কাশিজোড়া পরগনার প্রথম রাজা গঙ্গানারায়ণ সিং (রায়) তাঁর প্রথম কাছারিবাড়ি স্থাপন করেন। শোনা যায়, এখানকার ভট্টাচার্য ব্রাহ্মণদের কাশিজোড়ার রাজা গঙ্গানারায়ণ সিং হুগলী থেকে আনয়ণ করেছিলেন। কাশিজোড়া পরগনার রাজা এই গ্রামের জমিদারিত্ব সেই ব্রাহ্মণদের দিয়েছিলেন। সেই প্রাচীন জমিদার বাড়ির দুর্গাপূজা আজও চলে আসছে। তবে দুর্গাপূজা কবে শুরু হয়েছিল তা জানা যায়নি। কাশিজোড়া রাজ পরিবারের দুর্গাপূজা প্রায় ২৭৫ বছরের প্রাচীন। রাজপরিবারের দুর্গাপূজাকে এই এলাকায় সবচেয়ে প্রাচীন ধরা হয়। ভট্টাচার্য পরিবারের দুর্গাপূজা সমসাময়িক কালে শুরু হয়েছিল ধরা হলে এই দুর্গাপূজা মোটামুটি ২৫০ বছরের প্রাচীন বলে ধরা যেতে পারে। ©রূপেশ সামন্ত
যাইহোক, পুরো ভট্টাচার্য পরিবার পূজার সময় সমবেত হয়। অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পূজার রীতিনীতি পালন করা হয়। নিখুঁত সময় ধরে পূজার প্রতিটি ধাপ সম্পন্ন হয়। এক মেড়ে মৃন্ময়ী প্রতিমা নির্মিত হয়। প্রতিমার মূখাবয়ব প্রতিবছর একই রাখা হয়। পূজায় দুইবেলা ভোগরান্না হয়। এই পূজার বিশেষত্ত্ব হল, রাত্রিবেলার ভোগরান্নায় মাছের ঝোল করতেই হয়। এই প্রাচীন রীতিটি আজও নিষ্ঠার সঙ্গে মেনে চলা হয়। পরিবারের সকলে একযোগে দেবীর চরণে পুস্পঞ্জলি নিবেদন করেন।
©রূপেশ সামন্ত
No comments:
Post a Comment