পাঁশকুড়ার রেশম ব্যবসায়ীর নামেই কলকাতার কাশিপুর নামকরণ
© রূপেশ কুমার সামন্ত, লেখক, ‘পাঁশকুড়ার ইতিহাস ও ঐতিহ্য'
প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ইভান কটন এক জায়গায় লিখেছেন, "কাশীপু্রের তীরবর্তী অংশটি নদীর (হুগলি নিদী) তীরবর্তী সবচেয়ে সুন্দর অংশগুলির অন্যতম। এইখানে অনেকগুলি বাগানবাড়ি অবস্থিত। সেই যুগেই কাশীপুর একটি শিল্পাঞ্চল হিসাবে গড়ে ওঠে। এখানে স্থাপিত হয় গভর্নমেন্ট গান ফাউন্ড্রি, স্নাইডার ও রাইফেল শেল কারখানা (কর্নেল হাচিনসন কর্তৃক স্থাপিত) এবং একাধিক চিনিকল ও চটকল”। কাশিপুরেই রয়েছে ভারত সরকারের বিখ্যাত 'গান এন্ড শেল ফ্যাক্টরি'। এই ফ্যাক্টরির স্থানেই ছিল ব্রিটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মূলত রেশমজাত সুতার গুদাম। আঠারো শতকের মাঝামাঝি সময়ে রেশম উৎপাদনের অন্যতম কেন্দ্র ছিল তৎকালীন রাধানগর (ঘাটাল), কুতুবপুর, নাড়াজোল, কাশিজোড়া পরগনা (পাঁশকুড়া)। এই অঞ্চল গুলিতে যে উন্নতমানের রেশম চাষ হত, তা জানা যায় ও’মালির ‘বেঙ্গল ডিষ্ট্রিক্ট গেজেটিয়ার- মেদিনীপুর’ গ্রন্থ থেকে। অর্থ্যাৎ ঘাটাল, দাসপুর, নাড়াজোল, পাঁশকুড়া জুড়ে এক বৃহৎ অঞ্চলে উন্নতমানের রেশম চাষ হত। এতদঞ্চলের রেশম ব্যবসায়ীদের গগনচুম্বী সমৃদ্ধি অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। পাঁশকুড়ার কাশিনাথ বর্মা ছিলেন এমনই এক ধনী রেশম ব্যবসায়ী। তাঁর বাড়ি ছিল ততকালীন কাশিজোড়া পরগণার রাজবল্লভপুর গ্রামে, যা বর্তমানে পাঁশকুড়ার রঘুনাথবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের অবস্থিত সুন্দরনগর গ্রাম নামে পরিচিত। এই কাশিনাথ বর্মা একদিকে যেমন সমৃদ্ধ রেশম ব্যনসায়ী ছিলেন, অন্যদিকে তেমন রাজা সুন্দরনারায়ণ রায়ের 'কলিকাতার এজেন্ট' ছিলেন। ব্যবসায়িক সূত্রে তিনি কলকাতার কাশিপুরে বাস করতেন। তাঁরই নাম অনুসারে স্থানটির নাম হয় কাশিপুর। এবিষয়ে ২৮/১২/১৯৮০ তারিখে প্রকাশিত 'যুগান্তর' পত্রিকার একটি প্রতিবেদনের কিয়দংশ উল্লেখ্য- 'দমদম বিমান ঘাঁটির একটি অংশ পরিচিত কাশীপুর নামে। ১৭৭০ সালের কোন এক সময়ে মেদিনীপুরের রাজবল্লভপুর গ্রামের (সুন্দরনগর) রেশম ব্যবসায়ী কাশীনাথ বর্মা এখানে এসে বাস করতে থাকেন। তাঁর নাম থেকে হয় কাশীপুর। কাশীপুর গান এন্ড শেল ফ্যাক্টরির জায়গায় ছিল কোম্পানির সুতা গুদাম'।
ছবি- ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত
পুস্তক- “পাঁশকুড়ার ইতিহাস ও ঐতিহ্য”
লেখক- রূপেশ কুমার সামন্ত
পুস্তক প্রাপ্তিস্থান- দিপীকা বুক স্টল
পাঁশকুড়া স্টেশন সংলগ্ন বাজার
অনলাইন / ক্যুরিয়ার- 9153099507
No comments:
Post a Comment