Posts

Showing posts from October, 2020

পাঁশকুড়ার চাঁপাডালির চক্রবর্তী পরিবারের দুর্গাপূজায় আবশ্যিক মাছের ঝোলের ভোগরান্না- Old Durga Puja at Panskura

Image
 পাঁশকুড়ার চাঁপাডালির চক্রবর্তী পরিবারের দুর্গাপূজায় আবশ্যিক মাছের ঝোলের ভোগরান্না ©রূপেশ সামন্ত      বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী ও পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন ভূমি ও ভূমি রাজস্ব মন্ত্রী শ্যামাদাস ভট্টাচর্যের আদি বাসভূমি হল পাঁশকুড়ার চাঁপাডালি গ্রাম। পুরো ভট্টাচার্য পরিবারই একসময় পাঁশকুড়ার স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দান করেছিল। শ্যামাদাস বাবুর পিতা সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, মাতা ইন্দুমতি ভট্টাচার্য ও ভাই কালিদাস ভট্টাচার্য ছিলেন বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী। এছাড়াও এই চাঁপাডালি গ্রাম ঐতিহাসিক ভাবেও অত্যন্ত গূরুত্বপূর্ণ। এখানেই ১৫৭৩ খ্রিষ্টাব্দে কাশিজোড়া পরগনার প্রথম রাজা গঙ্গানারায়ণ সিং (রায়) তাঁর প্রথম কাছারিবাড়ি স্থাপন করেন। শোনা যায়, এখানকার ভট্টাচার্য ব্রাহ্মণদের কাশিজোড়ার রাজা গঙ্গানারায়ণ সিং হুগলী থেকে আনয়ণ করেছিলেন। কাশিজোড়া পরগনার রাজা এই গ্রামের জমিদারিত্ব সেই ব্রাহ্মণদের দিয়েছিলেন। সেই প্রাচীন জমিদার বাড়ির দুর্গাপূজা আজও চলে আসছে। তবে দুর্গাপূজা কবে শুরু হয়েছিল তা জানা যায়নি। কাশিজোড়া রাজ পরিবারের দুর্গাপূজা প্রায় ২৭৫ বছরের প্রাচীন। রাজপরিবারের দুর্গাপূজাকে এই এলাকায়...

‘পঞ্চমুণ্ডি’ আসনে পূজিতা হন পাঁশকুড়ার ‘যশোড়া রাজবাড়ি’র দুর্গা- Old Durga Puja at Panskura

Image
  ‘পঞ্চমুণ্ডি’ আসনে পূজিতা হন পাঁশকুড়ার ‘যশোড়া রাজবাড়ি’র দুর্গা © রূপেশ সামন্ত      সপ্তমীতে জ্বালানো হয় হোমযজ্ঞের আগুন। সেই আগুন নেভে দশমীর বিসর্জনে। সপ্তমীতে শুরু হয় ছাগবলি। চলে নবমী পর্যন্ত। হোমযজ্ঞের আগুন ও বলির হাড়িকাঠের সামনে ‘পঞ্চমুণ্ডি’ আসনে পূজিতা হন জমিদার বাড়ির দেবী দুর্গা। এই দুর্গাপূজা স্থানীয় ভাবে অত্যন্ত জনপ্রিয় ও প্রভাব-প্রতিপত্তিময়। ১৭৯৩ খ্রিষ্টাব্দে লর্ড কর্ণওয়ালিশের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা চালু হয়। সেই আইনে ১৭৯৪ খ্রিষ্টাব্দে কাশিজোড়া পরগনার জমিদারী ক্রোক হয় এবং নিলাম হয়। জমিদার তারাপদ ভূঞ্যা কাশিজোড়া প র গনার সেই নিলামকৃত সম্পত্তির দু’আনা মালিক ছিলেন বলে জানা যায় । ফলে সেই সময়কাল ধরলে জমিদার তারাপদ ভূঞ্যা র চালু করা দুর্গা পূজার বয়স ২০০ বছরের অধিক। যশোড়ায় জমিদারে নির্মিত বিরাট ইঁটের বাড়ি এখন ধ্বংসপ্রায়। জঙ্গলাকীর্ণ কিছুটা বাড়ি এখনও দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয় মানুষ এটিকে ‘রাজবাড়ি’ নামেই চেনে। ‘জমিদারী সম্পত্তির’ বর্তমান উত্তরাধিকারীরা নিজদেরকে তৎকালীন জমিদারের বংশধর বলেই দাবী করেন।      যাইহোক, দেবী দুর্গার প্রাচ...

কুমারী মেয়েদের রক্ষা করাই কুমারী পূজার উদ্দেশ্য- Kumari Puja

Image
কুমারী মেয়েদের রক্ষা করাই কুমারী পূজার মূল উদ্দেশ্য রূপেশ সামন্ত কুমারী পূজা দুর্গোৎসবের এক বর্ণাট্য অনুষ্ঠান পর্ব। বিশেষত কুমারীকে দেবী দুর্গার পার্থিব প্রতিনিধি হিসেবে পূজা করা হয়ে থাকে। কুমারী পূজা কি?---- কোন কুমারী মেয়েকে দেবী দুর্গার সামনে মাতৃভাবে পূজা করাকে কুমারী পূজা বলে। দুর্গাপূজার মহাষ্টমী পূজার শেষে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। আবার কোথাও কোথাও নবমীতেও কুমারী পূজা  হয়। পৌরাণিক আঙ্গিক---- একদা কোলাসুর স্বর্গ-মর্ত্য অধিকার করে নিয়েছিল। দেবগন বিপন্ন হয়ে পড়েন। তাঁরা মহাকালীর শরণাপন্ন হন। তখন দেবী পুনর্জন্মে কুমারীরূপে আসেন এবং কোলাসুরকে বধ করেন। তখন থেকেই মর্ত্যে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়। লেখক- রূপেশ সামন্ত পূজার ‘কুমারী’ হওয়ার যোগ্যতা---- কুমারী পূজার জন্য মেয়েকে ষোল বছরের কম বয়সী হতে হবে। অবশ্যই মেয়েকে অরজঃস্বলা হতে হবে। জাতি, ধর্ম বা বর্ণ নির্বিশেষে যে কোন কুমারী মেয়েই কুমারী পূজার যোগ্য হতে পারে। বেশ্যাকুল জাতির কন্যাও কুমারী পূজার ‘কুমারী’ হতে পারে। তবে আগের দিনে মূলত ব্রাহ্মণ কন্যাই পূজিত হত। অন্য কোথায় কুমারী পূজা?---- দূর্গা পূজার সময় ছাড়াও কালীপূজা, জগদ্ধাত্রীপ...

মাছপোড়া ও লালশাকের টক দিয়ে পাঁশকুড়ার রাজপরিবারের প্রাচীন দুর্গাপূজা- Oldest Durga Puja at Panskura

Image
মাছপোড়া ও লালশাকের টক দিয়ে পাঁশকুড়ার রাজপরিবারের প্রাচীন দুর্গাপূজা রূপেশ সামন্ত বর্তমান পাঁশকুড়া অতীতের কাশিজোড়া পরগনার অন্তর্গত ছিল। কাশিজোড়া রাজপরিবারের বর্তমান উত্তরাধিকারীরা এখন রঘুনাথবাড়ি অঞ্চলের সুন্দরনগরে বাস করেন। যতদূর জানা যায়, কাশিজোড়া রাজ পরিবারের দুর্গাপূজাই হল এই এলাকার সবচেয়ে প্রাচীন দুর্গাপূজা। অনেক ঐতিহাসিকই এই তথ্য মানতে চান না। কিন্তু এর চেয়ে প্রাচীন দুর্গাপূজার উদাহরণ প্রমানিত রূপে আজ পর্যন্ত আমাদের সামনে নেই।  অতীতে কাশিজোড়া পরগনার বেশির ভাগটাই ছিল জঙ্গলাকীর্ণ জলাভূমি। এইসব এলাকা ছিল মূলত দরিদ্র সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। তাদের পক্ষে রাজকীয় ব্যয়বহুল দুর্গাপূজা ছিল অলীক কল্পনা। এলাকার অন্যান্য প্রাচীন দুর্গাপূজার  এযাবৎ যা ঐতিহাসিক তথ্যসূত্র পাওয়া যায়, তা থেকে নিশ্চিত রূপে বলা যায়  পাঁশকুড়ার সবচেয়ে প্রাচীন দুর্গাপূজা হল কাশিজোড়া রাজার প্রায় ২৭৫ বছরের পুরানো দুর্গাপূজা। ইতিহাসঃ       ১৭৪৪ সাল।  কাশিজোড়া পরগনার রাজ-সিংহাসনে আরোহন করলেন রাজা নরনারায় রায়। পরগনা বিস্তারের উদ্দেশ্যে পাশের পরগনা ময়না আক্রমন করলেন। তিনি যুদ্ধ করেছি...

পাঁশকুড়া সম্পূর্ণ পূজা পরিক্রমা- ২০২০ Panskura Durgapuja Guide- 2020

Image
 পাঁশকুড়া দুর্গাপূজা গাইড ও পূজা পরিক্রমা- ২০২০ সম্পাদনা- রূপেশ সামন্ত প্রথম পর্বঃ পাঁশকুড়া রেল ষ্টেশন থেকে দক্ষিণ দিকে তমলুক-পাঁশকুড়া বাসরুট বরাবর পরপর চারটি প্যাণ্ডেল ও প্রতিমা দর্শণ করুন- ১. অগ্রদূত, পাঁশকুড়া পুরাতন বাস স্ট্যান্ড [ষ্টেশন সংলগ্ন ডানদিকে] ২. ব্যবসায়ী সমিতি, নুতন পাঁশকুড়া বাজার [দক্ষিণ দিকে কিছুটা এগোলেই বাজারের মধ্যে] ৩. যুগযাগৃতি, সুরারপুল [দক্ষিণ দিকে আরও কিছুটা এগোলে সুরার পুল সংলগ্ন] ৪. প্রতাপপুর সার্বজনীন, প্রতাপপুর [দক্ষিণ দিকে আরও কিছুটা এগোলে বাংলামোড়ের কাছে] খাওয়ার ষ্টল- এই পর্বে পাঁশকুড়া পুরাতন বাস স্ট্যাণ্ডে ও সুরার পুলে স্থায়ী ও অস্থায়ী খাওয়ার ষ্টল পাবেন। উল্লেখযোগ্য রেস্টুরেন্টগুলি হল- বাস স্ট্যাণ্ডের ‘সত্যনারায়ণ মিষ্টান্ন ভান্ডার (নটু)’, সুরার পুলের ‘গৌর নিতাই মিষ্টান্ন ভান্ডার’ ও ‘ভোলা ক্যাটারার’। দ্বিতীয় পর্বঃ পাঁশকুড়া রেল ষ্টেশন থেকে পূর্বদিকে রেল আবাসন বরাবর পরপর দুটি প্যাণ্ডেল ও প্রতিমা দর্শণ করুন- ৫. রেল কলোনি, পাঁশকুড়া রেল আবাসন [ষ্টেশন সংলগ্ন পূর্বদিকে] ৬. আমরা ক’জন, ত্রিকোন পার্ক [ষ্টেশন থেকে পূর্বদিকে কিছুটা এগোলেই ত্রিকোন পার্ক পড়বে] খাওয়া...

বাঙালীর দুর্গাপূজা- কৃতিত্ব কৃত্তিবাসের History of Durga Festival of Bengal

Image
  বাঙালীর দুর্গাপূজা- কৃতিত্ব কৃত্তিবাসের © রূপেশ সামন্ত      দুর্গা পূজা বাঙালীর সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্বজনীন উৎসব। প্রকৃতপক্ষে দুর্গাপূজা দু’বার হয়- আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষে একবার ও চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষে আরেকবার হয়। আশ্বিন মাসের দুর্গা পূজা শারদীয়া দুর্গা পূজা ও চৈত্র মাসের দুর্গা পূজা বাসন্তী দুর্গা পূজা নামে পরিচিত।   শরৎ কালের দুর্গা পূজাই ‘অকালবোধন’----      রামায়নে রাম ও রাবণের যুদ্ধের সময় শরৎকালে দুর্গাকে পূজা করা হয়েছিল। হিন্দু মতে, শরৎকালে দেবতারা নিদ্রা দেন। তাই শরৎকালে পূজা করার বিধি নেই। কিন্তু ‘ অকালে ’ রাম চন্দ্র এই দুর্গা কে নিদ্রা থেকে ‘বোধন’ করে পূজা করেছিলেন বলেই এই সময়ের শারদীয়া দুর্গা পূজাকে ‘ অকালবোধন ’ বলে। রাম ও রাবনের প্রসঙ্গ মানেই ‘রামায়ণ’ মহাকাব্যের কথা আমরা জানি। কিন্তু বাল্মিকীর মূল রাময়ণে দুর্গাপূজার অস্তিত্বই নেই। অকালবোধন বা দুর্গাপূজাকে বাংলায় রামায়ণ রচনাকালে অত্যন্ত সুনিপুন ভাবে যুক্ত করে গেছেন কৃত্তিবাস ওঝা। ফলে যে দুর্গাপূজাকে নিয়ে বাংলা তথা বাঙালীর এতো মাতামাতি, তার কৃতিত্ব কিন্তু কৃত...