Wednesday, 27 November 2024

ধর্মমঙ্গল কাব্যের কিংবদন্তী লাউসেনের ময়নাগড়ের দুর্ভেদ্য পরীখা

 ময়নাগড়ের দুর্ভেদ্য পরীখা

রূপেশ কুমার সামন্ত

আনুমানিক দশম শতাব্দীর ধর্মঙ্গল মহাকাব্যের লাউসেনের কিংবদন্তী রাজধানী হল ময়নাগড়। গৌড়েশ্বর ধর্মপালের রাজত্বকালে কর্ণসেন তাঁর অধীনে রাজত্ব করতেন। ইছাই ঘোষের সঙ্গে যুদ্ধে কর্ণসেন তাঁর ছয় পুত্রকে হারান। তাঁর স্ত্রী বিষপানে দেহত্যাগ করেন। তখন গৌড়েশ্বর ধর্মপাল নিজের শ্যালিকা রঞ্জাবতীর সঙ্গে কর্ণসেনের বিয়ে দেন। কর্ণসেনকে দক্ষিণবঙ্গের একটি বিশেষ অঞ্চল দান করেন। এটি কর্ণগড় নামে খ্যাত। এই কর্ণগড়ই পরে ময়নাগড় নামে প্রসিদ্ধ হয়। এই রঞ্জাবতীর ছেলে ছিল লাউসেন। এই লাউসেনের কিংবদন্তী রাজধানী হল ময়নাগড়। পরবর্তী কালে  বাহুবলীন্দ্র রাজারা বালিসীতাগড় থেকে নিজেদের রাজধানী ময়নাগড়ে স্থানান্তরিত করেন। কালিদহ ও মাকড়দহ নামে দুটি পরীখা দিয়ে ঘেরা এই ছোট্ট দ্বীপ ময়নাগড়। দ্বীপটি ছিল দুর্ভেদ্য দুর্গ। চারিদিকে ঘেরা ছিল পার্বত্য গুলিবাঁশের ঝাড়ের দুর্ভেদ্য প্রাকৃতিক প্রাচীর।

মঞ্জুশ্রী বাহুবলীন্দ্রের 'চিকের আড়ালে' প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, পূর্বে পরীখা দুটি কচুরীপানা ও পদ্মতে পরিপূর্ণ ছিল। কচুরিপানা এত ঘন ছিল যে তার উপর দিয়ে মানুষ বা জন্তু জানোয়ারের চলাফেরা করতে অসুবিধে হত না। পদ্মের ডাটায় জড়িয়ে থাকত সর্পকুল। আর দুই পরীখার মাঝের ঘন জঙ্গলে বিচরণ করত হরিণ, ময়ূর, ছোট বাঘ, বিষধর সাপ।  জলে ভেসে বেড়াত কুমির। একবার জনৈকা দাসী শীতকালে কাজের অবসরে চুল মেলে কালিদহের ধারে ঘুমিয়ে পড়লে সেই অসতর্ক মুহুর্তে কুমির তাকে গভীর জলে টেনে নিয়ে যায়।  গড়ে বসবাসরত প্রতিটি পরিবার এর নিজস্ব নৌকা রাখা ও নৌকা চালানো শেখা বাধ্যতামূলক। 

তথ্যসূত্র

কিল্লা ময়নাচৌরা

সম্পাদনা ড. কৌশিক বাহুবলীন্দ্র

ধর্মমঙ্গল কাব্যের কিংবদন্তী লাউসেনের ময়নাগড়ের বাঁশঝাড়ের দুর্ভেদ্য প্রাকৃতিক প্রাচীর

 ময়নাগড়ের বাঁশঝাড়ের দুর্ভেদ্য প্রাকৃতিক প্রাচীর 

রূপেশ কুমার সামন্ত

আনুমানিক দশঅম শতাব্দীর ধর্মঙ্গল মহাকাব্যের লাউসেনের কিংবদন্তী রাজধানী হল ময়নাগড়। গৌড়েশ্বর ধর্মপালের রাজত্বকালে কর্ণসেন তাঁর অধীনে রাজত্ব করতেন। ইছাই ঘোষের সঙ্গে যুদ্ধে কর্ণসেন তাঁর ছয় পুত্রকে হারান। তাঁর স্ত্রী বিষপানে দেহত্যাগ করেন। তখন গৌড়েশ্বর ধর্মপাল নিজের শ্যালিকা রঞ্জাবতীর সঙ্গে কর্ণসেনের বিয়ে দেন। কর্ণসেনকে দক্ষিণবঙ্গের একটি বিশেষ অঞ্চল দান করেন। এটি কর্ণগড় নামে খ্যাত। এই কর্ণগড়ই পরে ময়নাগড় নামে প্রসিদ্ধ হয়। এই রঞ্জাবতীর ছেলে ছিল লাউসেন। এই লাউসেনের কিংবদন্তী রাজধানী হল ময়নাগড়। পরবর্তী কালে  বাহুবলীন্দ্র রাজারা বালিসীতাগড় থেকে নিজেদের রাজধানী ময়নাগড়ে স্থানান্তরিত করেন। কালিদহ ও মাকড়দহ নামে দুটি পরীখা দিয়ে ঘেরা এই ছোট্ট দ্বীপ ময়নাগড়। দ্বীপটি ছিল দুর্ভেদ্য দুর্গ। চারিদিকে ঘেরা ছিল কাঁটাবাঁশ ঝাড়ের দুর্ভেদ্য প্রাকৃতিক প্রাচীর।

রাজা গোবর্ধনানন্দ ময়নাগড় অধিকার করে সংস্কারের কাজ করেন। তিনি পুরাতন গড় ভেঙে নতুন ও প্রসস্থ গড় নির্মান করেন। গড়ের চারিদিকে পরীখার পার্শে পার্বত্য বাঁশের ঝাড় ঝাড় তৈরি করে দুর্ভেদ্য এক প্রাকৃতিক প্রাচীর তৈরি করেন। এই পার্বত্য বাঁশের ঝাড় এমন ভাবে পরস্পর সংলগ্ন ও জড়িয়ে থাকত যে তা এক নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরী করত। এই প্রাচীর ভেদ করে লৌহ নির্মিত তীর বা কামানের গোলাও যেতে পারত না। শত্রুপক্ষের অশ্বারোহী সৈনিকও এই প্রাচীর ভেদ করে ঢুকতে পারত না। ১৩৩৯ সালের ভয়ংকর ঝড়ে এই বাঁশঝাড়ের প্রাচীরের প্রভূত ক্ষতিসাধন হয়। বর্তমানে এই বাঁশঝাড়ের বিচ্ছিন্ন কিছু অস্তিত্ব রয়েছে।

তথ্যসূত্র

কিল্লা ময়নাচৌরা, ড. কৌশিক বাহুবলীন্দ্র

ধর্মমঙ্গল কাব্যের কিংবদন্তী লাউসেনের ময়নাগড়ের কদমা ও থালা বাতাসা

 ময়নাগড়ের কদমা ও থালা বাতাসা

রূপেশ কুমার সামন্ত

আনুমানিক দশম শতাব্দীর ধর্মঙ্গল মহাকাব্যের লাউসেনের কিংবদন্তী রাজধানী হল ময়নাগড়। গৌড়েশ্বর ধর্মপালের রাজত্বকালে কর্ণসেন তাঁর অধীনে রাজত্ব করতেন। ইছাই ঘোষের সঙ্গে যুদ্ধে কর্ণসেন তাঁর ছয় পুত্রকে হারান। তাঁর স্ত্রী বিষপানে দেহত্যাগ করেন। তখন গৌড়েশ্বর ধর্মপাল নিজের শ্যালিকা রঞ্জাবতীর সঙ্গে কর্ণসেনের বিয়ে দেন। কর্ণসেনকে দক্ষিণবঙ্গের একটি বিশেষ অঞ্চল দান করেন। এটি কর্ণগড় নামে খ্যাত। এই কর্ণগড়ই পরে ময়নাগড় নামে প্রসিদ্ধ হয়। এই রঞ্জাবতীর ছেলে ছিল লাউসেন। এই লাউসেনের কিংবদন্তী রাজধানী হল ময়নাগড়। পরবর্তী কালে  বাহুবলীন্দ্র রাজারা বালিসীতাগড় থেকে নিজেদের রাজধানী ময়নাগড়ে স্থানান্তরিত করেন। কালিদহ ও মাকড়দহ নামে দুটি পরীখা দিয়ে ঘেরা এই ছোট্ট দ্বীপ ময়নাগড়। দ্বীপটি ছিল দুর্ভেদ্য দুর্গ। চারিদিকে ঘেরা ছিল পার্বত্য গুলিবাঁশের ঝাড়ের দুর্ভেদ্য প্রাকৃতিক প্রাচীর।

এখানে প্রতিবছর রাসপূর্ণিমায় শুরু হয় বিখ্যাত রাসমেলা। এই মেলার মুখ্য আকর্ষণ হল থালা বাতাসা ও কদমা। এই বাতাসা গুলি থালার মতো বড় বড় সাইজের হয়। আর কদমা গুলি বড় বলের ন্যায়। উপকরণ হিসাবে লেবু ও চিনির রস দ্বারা প্রস্তুত 'গাবী'র সঙ্গে হাইড্রো নামক পাউডার অনেকটাই মেশানো হয়। এজন্য এগুলো হালকা, নরম ও সাদা হয়। তবে কদমাতে শুধুমাত্র গাবী মেশানো হয়। পাউডার মেশানো হয় না। কদমা গোল ও কুমড়োর মতো শিরাবিন্যাস যুক্ত হয়। কদম ফুলের মতো দেখতে হওয়ার কারনে এর নাম কদমা। এক একটি কদমার ওজন দেড় থেকে দুই কেজি পর্যন্ত হয়। আর এক একটি থালা বাতাসার ওজন দুই থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত হয়।

তথ্যসূত্র

কিল্লা ময়নাচৌরা, সম্পাদনা . কৌশিক বাহুবলীন্দ্র

ধর্মমঙ্গল কাব্যের কিংবদন্তী লাউসেনের ময়নাগড়ের রাসমেলা

 ময়নাগড়ের রাসমেলা

রূপেশ কুমার সামন্ত

আনুমানিক দশম শতাব্দীর ধর্মঙ্গল মহাকাব্যের লাউসেনের কিংবদন্তী রাজধানী হল ময়নাগড়। গৌড়েশ্বর ধর্মপালের রাজত্বকালে কর্ণসেন তাঁর অধীনে রাজত্ব করতেন। ইছাই ঘোষের সঙ্গে যুদ্ধে কর্ণসেন তাঁর ছয় পুত্রকে হারান। তাঁর স্ত্রী বিষপানে দেহত্যাগ করেন। তখন গৌড়েশ্বর ধর্মপাল নিজের শ্যালিকা রঞ্জাবতীর সঙ্গে কর্ণসেনের বিয়ে দেন। কর্ণসেনকে দক্ষিণবঙ্গের একটি বিশেষ অঞ্চল দান করেন। এটি কর্ণগড় নামে খ্যাত। এই কর্ণগড়ই পরে ময়নাগড় নামে প্রসিদ্ধ হয়। এই রঞ্জাবতীর ছেলে ছিল লাউসেন। এই লাউসেনের কিংবদন্তী রাজধানী হল ময়নাগড়। পরবর্তী কালে  বাহুবলীন্দ্র রাজারা বালিসীতাগড় থেকে নিজেদের রাজধানী ময়নাগড়ে স্থানান্তরিত করেন। কালিদহ ও মাকড়দহ নামে দুটি পরীখা দিয়ে ঘেরা এই ছোট্ট দ্বীপ ময়নাগড়। দ্বীপটি ছিল দুর্ভেদ্য দুর্গ। চারিদিকে ঘেরা ছিল কাঁটাবাঁশ ঝাড়ের দুর্ভেদ্য প্রাকৃতিক প্রাচীর।

  • ১৯৬৬ সাল থেকে বিশেষ সান্ধ্য রাস বা নৈশকালীন বিহার চালু হয়। রাস পূর্ণিমার সন্ধায় শ্যামসুন্দর জিউ দুই রাধিকাকে সঙ্গী করে পরীখার রাজঘাট থেকে নৌকাবিহার করেন। জমকালো সাজানো নৌকায় এই বিহারযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। পরীখার জ্যোতস্নালোকিত শান্ত জলে ভেসে বেড়ান শ্যামসুন্দর।  আতসবাজি আর আলীর বন্যায় চারিদিক ভেসে যায়। বেজে ওঠে শঙ্খ, কাঁসর, ঘন্টা, ঢাক, ঢোল, মৃদঙ্গ, খোল, করতাল। উৎসবের আবেশে রাস পুর্নিমা থেকে শুরু হয় রাসমেলা। লক্ষ মানুষের ভিড়ে সেই মেলা আজও তার ঐতিহ্য বহন করে চলেছে।
তথ্যসূত্র
কিল্লা ময়নাচৌরা, সম্পাদনা ড. কৌশিক বাহুবলীন্দ্র

Monday, 25 November 2024

পাঁশকুড়ার গোটপোতার বিস্ময়কর সেতু

 

পাঁশকুড়ার গোটপোতার বিস্ময়কর সেতু

© রূপেশ সামন্ত

পাঁশকুড়া ব্লকের ঘোষপুর অঞ্চলের গোটপোতা গ্রামে রয়েছে এক বিস্ময়কর সেতু। এখানে ক্ষীরাই নদী এবং মেদিনীপুর ক্যানেল একে অপরের উপর দিয়ে প্রবহমান। কোন প্রবাহই কাউকে স্পর্শ করে না দুটি জলপ্রবাহই স্বতন্ত্র ভাবে যুক্ত চিহ্নের মতো একে অপরকে অতিক্রম করে চলে গেছে। এটি ব্রিটিশ আমলের কারিগরি বিদ্যার অন্যতম নজির মেদিনীপুর ক্যনেলের জলস্তর ক্ষীরাইয়ের জলস্তরের থেকে উঁচু। তাই ক্ষীরাইকে আড়াআড়ি ভাবে অতিক্রম করার সময় যাতে মেদিনীপুর ক্যানেলের সব জল ক্ষীরাইয়ে না চলে যায় এবং ক্যানেলের জলস্তর যাতে দুইদিকে সারাবছর ঠিক থাকে, তাই এখানে বিশেষ এই কারিগরী বিদ্যার প্রয়োগ করা হয়েছে। এখানে একটি সেতুর সাহায্যে যুক্ত চিহ্নের ন্যায় আড়াআড়ি দুটি প্রবাহকে সম্পূর্ণ আলাদা করা হয়েছে। সেতুর উপর দিয়ে মেদিনীপুর ক্যানেল গিয়েছে এবং সেতুর নিচ দিয়ে ক্ষীরাই নদীকে প্রবাহিত করা হয়েছে। ক্ষীরাই নদীর উপর ১০টি খিলানের সাহায্যে সেতুটি তৈরি করা হয়েছে। এক সময় খড়্গপুর আই.আই.টি-র ছাত্র-অধ্যাপকরা এই বিস্ময়কর স্থাপত্য পরিদর্শনে নিয়মিত আসতেন। সেতুর উপর দিয়ে প্রবাহিত মেদিনীপুর ক্যানেল দিয়ে তৎকালীন সময়ে অনায়াসে নৌকা, ষ্টীমার যাতায়াত করত। আর ক্ষীরাইয়ের জল যখন শুকিয়ে যেত তখন ক্যানেলের নিচ দিয়ে মানুষ ও গরুর গাড়ি যাতায়াত করত।

মেদিনীপুর ক্যানেল জলপথের অতীত কথা

 

মেদিনীপুর ক্যানেল জলপথের অতীত কথা

রূপেশ কুমার সামন্ত

তীতে পাঁশকুড়ায় জলপথের গূরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ছিল কাঁসাই, ক্ষীরাই, বাকসী প্রভৃতি নদী ও খাল। এইসব জলপথে নৌকা, যন্ত্রচালিত নৌকা ইত্যাদি চলাচল করত। মূলত বর্ষাকালে বা জোয়ারের সময় মানুষ পরিবহনের কাজ বেশি করে করত। তখন স্থলপথে পরিবহন অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল ছিল। আজ থেকে কুড়ি বছর আগে পর্যন্তও নৌকা বা যন্ত্রচালিত নৌকায় মাল পরিবহন করতে দেখা গেছেশুধু নৌকা নয়, নদীপথে শ’য়ে শ’য়ে বাঁশ বা কাঠ ভাসিয়ে দিয়ে স্রোতের টানেও পরিবহন হত। এমনকি বিয়ে বাড়ির বরযাত্রী বা কন্যাযাত্রী পরিবহনেও বন্যার সময় জলভরা মাঠের মধ্য দিয়ে, নদী-খাল দিয়ে নৌকা বা যন্ত্রচালিত নৌকা ব্যবহৃত হত। কলাগাছে ভেলা তৈরি করে মানুষ নদী-খাল পারাপার বা মৎস শিকার করত। পরবর্তীতে বন্যা প্রতিরোধী ব্যবস্থা গড়ে উঠলে, নদী-খালের নাব্যতা কমে গেলে, স্থলপথ যোগাযোগ উন্নত হলে, নদী-খালে ব্রীজ তৈরি হয়ে গেলে জলপথ যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্রমশ গূরুত্ব হারায়।

     হাওড়া বা কলকাতা যাতায়াতের জন্য স্থলপথে যানবাহন পাওয়া দূরুহ ছিল। এছাড়াও কাঁসাইয়ের জলপথে যাতায়াতের জন্য দূরত্ব অনেক বেশি ছিল। ফলে মেদিনীপুর থেকে হাওড়ার সাঁকরাইল পর্যন্ত নৌ চলাচলের জন্য ব্রিটিশরা একটি খাল খননের পরিকল্পনা করে। এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় ‘ইষ্ট ইণ্ডিয়া ইরিগেশন এণ্ড ক্যানেল কোম্পানি’কেএই ক্যানেলের নামকরন হয় মেদিনীপুর ক্যানেল। এই ক্যানেলের খনন কার্য শুরু হয়েছিল ১৮৬৬ সালে এবং শেষ হয় ১৮৬৮ সালে। এছাড়াও ক্যানেল থেকে সেচ কার্য শুরু হয় ১৮৭১ সালে। L.S.S. O’Malley তাঁর ‘Bengal District Gazetteers- Midnapore’ এ লিখেছেন, ‘The construction of the Midnapore canal was begun by the East India Irrigation and Canal Company in 1866; the works were taken over by the Government two years later, and irrigation commenced in 1871.’ ক্যানেলের জল সরবরাহের উৎস মোহনপুরের কাছে কংসাবতী নদী। ক্যানেলটি মোহনপুর থেকে উলুবেড়িয়ার কাছে হুগলী নদী পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছেপ্রবাহপথের মাঝে পাঁশকুড়ার কাছে কংসাবতী নদী, কোলাঘাটের কাছে রূপনারায়ণ নদী ও হাওড়া জেলার দামোদর নদী অতিক্রম করে হুগলী নদীতে পড়েছে। উল্লেখ্য, এই প্রকল্পটি প্রকৃতপক্ষে ওড়িশা ক্যানেল প্রকল্পেরঅধীন ছিল। কলকাতা ও কটকের মধ্যে একটি নতুন জলপথ তৈরির জন্য প্রকল্পটি তৈরি গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে এটি পূর্বতন মেদিনীপুর জেলার আলাদা একটি প্রকল্প হিসাবেই রূপায়িত হয়।

     যাইহীক, ১৮৭৩ সালে কোম্পানি জলপথে ব্যবসা শুরু করে। লঞ্চ পরিষেবা শুরু হয়। মাল ও যাত্রী পরিবহন শুরু হয়। পুরানো পাঁশকুড়ায় থানার কাছে একটি লকগেট তৈরি হয়। ঐ লকগেট জলপথ-ষ্টেশন রূপে ব্যবহৃত হতে শুরু করে। পাঁশকুড়ার যাত্রী ও পন্য ওখানেই ওঠানামা করত। পাঁশকুড়া থানার কাছে কাঁসাই পাড়ে স্থিত নোঙরের শিকল বাঁধার একটি স্থম্ভ তারই সাক্ষ্য বহন করে। ইন্দুমতী দেবী (জন্ম-১৮৮৮) তাঁর ‘স্মৃতিকনা’ গ্রন্থে লিখেছেন,-‘রেল চালু হবার আগে, মেদিনীপুর ক্যানেল দিয়ে ছোট স্টীমার চড়ে কলকাতা যেতে হত। পাঁশকুড়া বাজারে ষ্টীমারে উঠতে হত। সকালে রওয়ানা হয়ে কলকাতা পৌঁছতে বিকাল গড়িয়ে যেত’ কাঁটাপুকুরের কাছে রূপনারায়ন নদী চওড়া হয়ে যাওয়ার ফলে নৌযান চলাচলে সমস্যা তৈরি হতে থাকে। এরপর রেল পরিষেবা শুরু হওয়ার পর জলপথের গূরুত্ব কমতে থাকে। তখন ১৯০৬ সালে ক্যানেল কোম্পানি জলযানের মাশুল অর্ধেক করে দেয়। এরপর যাতায়াত কিছুটা বৃদ্ধি পায়। উল্লেখ্য, কংসাবতী ও মেদিনীপুর ক্যানেলে তৎকালীন উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়াও ঘাটাল-কোলাঘাট-তমলুক স্টীমার সার্ভিস চালু ছিল। ক্যালকাটা স্টিম নেভিগেশন কোম্পানির এজেন্ট হোরমিলার কোম্পানি এই সার্ভিস চালু করেছিল। স্টীমারগুলি ছিল দোতলা এবং এগুলিতে দুটি করে চোঙ থাকত। স্টীমার গুলি চলতো রূপনারায়ণ নদীতে। স্টীমার থামত দেনান ষ্টেশনে। স্টীমার গুলির নাম ছিল ‘ষোড়শী’, ‘শীতলা’, ‘কিন্নরী’, ‘উর্বশী’, ‘সুকেশী’ ইত্যাদি।

Sunday, 17 November 2024

India successfully conducting flight trial of long range hypersonic missile


In the X handle Ministry of Defence declared the successful conduction of a flight trial of long range hypersonic missile on 16th November, 2024. In the X handle Defence Ministry posted a press release: "The
@DRDO_India has successfully conducted a flight trial of its long range hypersonic missile on  16th Nov 2024 from Dr APJ Abdul Kalam Island, off-the-coast of Odisha". The Ministry quoted that Defence Minister Shri
@rajnathsingh had congratulated DRDO, Armed Forces and the Industry for successful flight trial of country's first long range hypersonic mission, and termed it a historic achievement.
In the X handle Rajnath Sing, the hon'ble Minister of Defence published a press release:
"India has achieved a major milestone by successfully conducting flight trial of long range hypersonic missile from Dr APJ Abdul Kalam Island, off-the-coast of Odisha. This is a historic moment and this significant achievement has put our country in the group of select nations having capabilities of such critical and advanced military technologies. I congratulate Team @DRDO_India
, our Armed Forces and the Industry for stupendous achievement". It's a great achievement of India and a great day of proud.
Photo source: the wall of DRDO site

ফিরিয়ে দাও সেই বেহুলা

👉ফিরিয়ে দাও সেই বেহুলা নদী
©রূপেশ সামন্ত
পাঁশকুড়াকে গ্রাস করতে চাইছে কংসাবতী। মানুষ না মানলেও ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে প্রকৃতির পুনরাবৃত্তির বৈজ্ঞানিক নিয়মেই পাঁশকুড়াকে একদিন গ্রাস করে নেবে কংসাবতী, এ কথা সত্য।
২০১৩ সালে এবং ২০২৪ সালে গড় পুরুষোত্তমপুর ও জন্দরায় ভাঙনের মাধ্যমে কংসাবতী তার প্রাচীন পথ ও রূপ দেখিয়ে দিয়েছে। এছাড়াও রানিহাটী, চাঁপাডালি, কল্লা, ভবানিপুর, তিলন্দপুর প্রভৃতি স্থানের ভাঙন প্রবনতা প্রবল ভাবে বাড়ছে। আগামী দিনে আরও বাড়বে। কিন্তু কেন এই প্রবনতা?
আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে আজ থেকে প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে। মহিষাদলের রাজ সিংহাসনে তখন রাজা কল্যান রায়। তিনি সিংহাসনে আরোহন করেছিলেন ১৬৫৩ খ্রিষ্টাব্দে। তখন কাশিজোড়া পরগনার (এর মধ্যে ছিল আধুনিক পাঁশকুড়াও) সিংহাসনে আসীন ছিলেন রাজা প্রতাপনারায়ণ রায় (রাজত্বকাল ১৬২৪-১৬৬০)। মহিষাদলের রাজা কল্যান রায় কংসাবতী নদীর চাঁপাডালির কাছ থেকে খাল কেটে দক্ষিণ দিকে নিয়ে গিয়ে ফেললেন হলদি নদীতে। মালীবুড়োর 'লস্কর দিঘির মালা' গ্রন্থে সেই দৃশ্যের বর্ণনা পাওয়া যায়। সেই খালটি রায়খালি বা নয়া কাটান নামে পরিচিত ছিল। উল্লেখ্য, কংসাবতী নদীর বর্তমান প্রবাহপথ, যা চাঁপাডালির পর থেকে দক্ষিণ দিকে রয়েছে, তা আজ থেকে ৩৫০ বছর আগে ছিল না। তখন কংসাবতী নদী চাঁপাডালি থেকে পূর্ব দিকে প্রতাপপুর, চাঁচিয়াড়া, আটবেড়িয়া, রঘুনাথবাড়ি, হরশংকর, টুল্যা, রাধামনির উপর দিয়ে গিয়ে বহু শাখায় বিভক্ত হয়ে তমলুকে রূপনারায়ণে পড়ত। এই নদীখাতটি বর্তমানে অবলুপ্ত। পুরানো মানচিত্রে এই নদীখাত 'ওল্ড বেড অফ কসাই' নামে উল্লিখিত। বর্তমানের উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণে এই মজা নদীখাতের অস্তিত্ব স্পষ্ট ভাবেই জানা যায়। এই নদীটিই এককালে বেহুলা, গৌরি, গাঁঙুড়া ইত্যাদি নামে পরিচিত ছিল। 
     মহিষাদলের রাজা খাল কেটে কংসাবতীর জল মহিষাদলে নিয়ে গিয়ে নিজের রাজ্যের জল-সমস্যা মেটালেও অন্য এক গভীর সংকট তৈরি করলেন। ভূ-প্রকৃতি গত ভাবে এতদঞ্চলের দক্ষিনাংশ ঢালু। ফলে কংসাবতীর বেশির ভাগ জল খাল দিয়েই প্রবাহিত হতে শুরু করল। ধীরে ধীরে খালটিই কংসাবতীর মূল প্রবাহ হয়ে গেল। আগের প্রবাহপ্রথটি মজা নদীতে পরিনত হতে থাকল। ধীরে ধীরে তা বেহুলা নদী নামে ক্ষীণধারায় প্রবাহিত হতে লাগল। LSS O'Malley সাহেব তাঁর ১৯১১ সালের ডিস্ট্রিক্ট গেজেটিয়ারে ১০০ বছর আগেও বেহুলা বা গৌরি নদীর প্রবহমানতার কথা উল্লেখ করে গেছেন। অর্থাৎ ১৮১১ সালেও এই নদী ক্ষীণ হলেও প্রবহমান ছিল। ১৮৫২ সালে ব্রিটিশরা চাঁপাডালিতে বেহুলার মুখ স্থায়ী ভাবে বেঁধে দিল। এইভাবে সমাধিস্থ হল প্রকৃতির প্রবাহ পথের। 
    কংসাবতীর নিম্ন-প্রবাহপথের এই পরিবর্তনই হল প্রকৃতির উপর মানুষের হস্তক্ষেপের জ্বলন্ত উদাহরণ। খাল কেটে ও গতিপথে বাঁধ দিয়ে মানুষের হস্তক্ষেপে একটি নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, তার মোহনাও পরিবর্তন হয়ে গেছে রূপনারায়ণ থেকে হলদি নদীতে।
     প্রকৃতির উপর হস্তক্ষেপ প্রকৃতি কখনো মানবে না। সে বারবার জানানও দিচ্ছে। ভূ-প্রকৃতির নিয়মেই কংসাবতীর নিম্ন উপত্যকা ক্রমশ উঁচু হচ্ছে। কংসাবতী ফিরে পেতে চাইছে তার আদিপথ- বেহুলা নদীর পথে। কংসাবতীর প্রাচীন সেই বেহুলা নদীর পথে আজ গড়ে উঠেছে কংক্রিটের নির্মান। নদীখাতকে গ্রাস করেছে মানুষ। সেদিন আর বেশি দূরে নয়, কংসাবতী গ্রাস করবে তার প্রাকৃতিক পথকে প্রাকৃতিক নিয়মেই। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির সূত্র মেনেই বেহুলা নদীর খাত ধরে পাঁশকুড়াকে একদিন গ্রাস করে নেবে কংসাবতী। প্রকৃতির রুদ্র রূপের কাছে মানুষ বড়ই অসহায়। তার ধ্বংসলীলার কাছে মানুষ খড়-কুটোর মতো ভেসে যাবে একদিন। কংসাবতী ফিরিয়ে নেবে তার আদি প্রাকৃতিক পথ। সময় থাকতেই ফিরিয়ে দাও সেই বেহুলা নদী। 
©রূপেশ সামন্ত


পাঁশকুড়ার অপরূপা এক নদী বাকসী

© রূপেশ কুমার সামন্ত
সুজলা সুফলা পাঁশকুড়ার পশ্চিমে মায়াবী আঁচলে বয়ে চলা এক নদী হল বাকসী। অনেকে একে খালও বলে থাকে। দিগন্ত বিস্তৃত মাঠের জলরাশিতে পুষ্ট হওয়া অপরূপা এই নদী অবিরাম প্রবহমান। পাঁশকুড়ার গ্রামগঞ্জ, মানুষের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে মিশে আছে এই নদী। এই নদীর কতিপয় স্বকীয়তা আছে। নিরন্তর বয়ে চলাই তার বৈশিষ্ট্য। এই নদীতে খেলে জোয়ার-ভাটা। কখনো উজানে স্রোত, কখনো ভাটিতে। মাঝে মাঝে দুই তীরকে ভাসিয়ে জল ও পলি দিয়ে সজীব ও উর্বর করে তুলে। নদীর ওপর দিয়ে চলে নৌকা, ডোঙা, ভেলা। নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে হাটবাজার, গ্রাম-গঞ্জ। বক, মাছরাঙা খেলা করে এই নদীর জলে। পানকৌড়িরা নদীর বুকে ডুব দিয়ে মাছ শিকার করে। জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। আবার কখনো কখনো রুদ্ররূপ ধারণ করে গ্রাস করে নেয় গ্রামজনপদ, ঘরবাড়ি ও ফসলের জমি। বর্ষায় এই নদী যেমন ভয়ংকরী, আবার শীতে হাঁটুজলে সেই নদীই সুন্দরী। তখন বিস্তৃত উপত্যকা জুড়ে শুধুই বাহারী ফুল আর সব্জী। এই নদী নিয়ে কত গল্প, উপন্যাস, কবিতা, গান স্থান পায় বইয়ের পাতায়। লাজুক পল্লিবধূর মতা ছন্দ তুলে এঁকেবেঁকে চলা সেই নদীই হল বাকসী।

উৎস সন্ধানে
ডেবরা ব্লকের দক্ষিন হীজলদা গ্রামে মেদিনীপুর ক্যানেল থেকে বাকসী নদীর সৃষ্টি। মেদিনীপুর ক্যানেলে বাকসী নদীর সৃষ্টি মুখে রয়েছে লকগেট বা পুল। এটিকে ‘ঝাঁপার পুল’ বলে। বৃটিশ আমলে লকগেট বা পুলটি এমন ভাবে তৈরি, যাতে বর্ষাকালে মেদিনীপুর ক্যানেলের অতিরিক্ত জল ঝাঁপিয়ে বাকসী নদীতে ঢোকে। তাই এই লকগেটটির ‘ঝাঁপার পুল’ নামে পরিচিত।

প্রবাহ পথ
মেদিনীপুর ক্যানেলের ‘ঝাঁপার পুলে’র কাছে বাকসী খাল সৃষ্টি হয়ে ডেবরা ব্লকের দক্ষিন হীজলদা গ্রামকে পশ্চিম দিকে রেখে ও পাঁশকুড়া ব্লকের ঘোষপুর গ্রামকে পূর্ব দিকে রেখে দক্ষিন দিকে প্রবাহিত হয়েছে। এরপর সুন্দরপুরের রেলপুল পেরিয়ে হাউর গ্রাম পঞ্চায়েতের হাউর গ্রাম, হরশঙ্কর গ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কালিদান গ্রামে এসে বাকসী নন্দী পূর্বদিকে বেঁকে প্রবাহিত হয়েছে। খালটি পূর্বদিকে রাধাবনেরর কছে ক্ষীরাই নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। নদীর পরবর্তী অংশ ক্ষীরাই-বাকসি নাম নিয়ে দক্ষিন-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে কংসাবতী নদীতে মিশেছে। উল্লেখ্য, কালিদান গ্রামে বাকসি খালের একটি শাখা পাটচাঁদা খাল নামে সৃষ্টি হয়ে পিংলার গোবর্ধনপুর হয়ে দক্ষিন দিকে প্রবাহিত হয়ে চণ্ডিয়া নদীতে মিশেছে।

প্রকটতা
বাকসী নদী মূলত বর্ষায় মাঠের জল ও মেদিনীপুর ক্যানেলের অতিরিক্র জলে পুষ্ট। বর্ষাকালে কালিদান গ্রাম থেকেই বাকসী খালের ভয়ংকর রূপ প্রকট হয়। একই ভাবে এতদঞ্চলে অর্থনীতিতেও এই নদীর প্রভাব অত্যন্ত প্রকট।

Thursday, 14 November 2024

বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট : ছাত্ররা দাবার ঘুঁটি নাত্র

বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট : ছাত্ররা দাবার ঘুঁটি মাত্র

আপাত ভাবে যেটি দৃশ্যত পরিস্ফুট, তা হল- ছাত্রদের বৈশম্য বিরোধী প্রবল কোটা আন্দোলনের ফলে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সেখ হাসিনা সরকারের পতন হয় এবং এই আন্দোলনে বহু প্রাণ চলে যায়কিন্তু গভীর ভাবে বিশ্লেষণ করে দেখলে বোঝা যায়, বিষয়টিকে স্বাভাবিক জনরোষের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে দেখালেও আসলে বিষয়টি যে বিরাট রাজনৈতিক দাবা খেলার অংশ তা ধীরে ধীরে পরিস্কার হচ্ছে এবং ছাত্ররা কেবল সেই দাবার ঘুঁটি ছিল মাত্র

দীর্ঘ বছরের সেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে কিছু ক্ষেত্রে স্বাভাবিক প্রতিষ্ঠান বিরোধী মানসিকা জনমানসে তৈরি হয়েছিল, এটা অস্বীকার করা যায় নাবিভিন্ন ক্ষেত্রে হাসিনা সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল না, একথাও বলা যায় নাতেমনি হাসিনা সরকার যে বছরে একেবারেই ব্যর্থ ছিল, একথাও বলা যায় নাদেশের সাধারণ নাগরিকদের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, বিদ্যুৎরাস্তাঘাট, পানীয় জল বিভিন্ন ক্ষেত্রে হাসিনা সরকারের উল্কেখ্যযোগ্য অবদান ছিল

কিন্তু প্রশ্ন হল- বাংলাদেশে কেন এমন রাজনৈতিক সংকট তৈরি হল?

উত্তর খুঁজতে গেলে অনেক গুলি বিষয় সামনে চলে আসেআর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল যে, এই রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে ছাত্র সমাজকে দাবার ঘুঁটি হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে

বৈশম্য বিরোধী আন্দোলন মোকাবিলায় শাসক দল হিসাবে আওয়ামী লীগ চরম ব্যর্থ ছিলতা না হলে আন্দোলনের উৎস শক্তি সম্পর্কে আগাম অনুধাবন করতে আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হল কেন? পালটা আন্দোলন গড়ে তোলা বা সরকারকে রক্ষা করতে রাজনৈতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে আওয়ামী লীগ  পারল না কেন? এখানে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কৌশল নির্মানের ব্যর্থতা, দলীয় কাঠামো নীতির অবক্ষয় নেতা-কর্মীদের অন্ত:সার শুন্যতা, নেতা-কর্মীদের বিচ্যুতিই প্রকট

সরকারের প্রতি জনগণের প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা শাসক দলের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এতদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা প্রধান রাজনৈতিক দলগুলি, যেমন বি এন পি, জামাত ইত্যাদি সরকারকে বিপাকে ফেলতে সচেষ্ট হয়ঠিক সেই সময়ই তাঁদের সামনে বৈশম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উর্বর ভুমিকে কাজে লাগানোর সুযোগ এসে যায়সরকারকে বিপাকে ফেলার এই সুযোগকে কৌশলগত ভাবে কাজে লাগানো অন্যায় নয়

কিন্তু আন্দোলনের একটা পর্যায়ে গিয়ে ছাত্ররা আর তাদের গন্ডী ধরে রাখতে পারেনিবৈশম্য বিরোধী আন্দোলনের যে দাবী ছিল, তা সুপ্রিম কোর্টের রায় সরকারের মেনে নেওয়ার পর, ছাত্রদের আর নতুন করে আন্দোলনের জায়গা নেইকিন্তু এরপর বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তাদের উদ্দেশ্য সফল করতে ছাত্রদের ঢাল করে এবং সফল হয়আসলে এই আন্দোলনে ছাত্রদের এক উদ্দেশ্য থাকলেও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর গোপন এজেন্ডা আলাদা ছিলছাত্ররা এই গোপন জায়গাটি ধরতে পারেনি অথবা তারাও গোপনে যুক্ত ছিলযাইহোকপরবর্তী কালে ছাছ্রদের ক্ষমতায় যোগদানের মধ্য দিয়ে গোপন যোগসাজশের বিষয়টিকেই পরিস্ফুট করেক্ষমতায় যোগদান করাটাও ছাত্রদের এক মহা ভুল, তা ভবিষ্যৎ বলবেতবে সার্বিক ভাবে ক্ষমতার পরিবর্তন ক্ষমতার গ্রহনের মধ্য দিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট ভাবে বোঝা যায় যে, ছাত্রদের যে ব্যবহার করে রাজনৈতিক যে পটপরিবর্তন ঘটানো হয়েছে, তাতে ছাত্ররা যে কেবলই দাবার ঘুঁটি ছিল, তা ভবিষ্যৎ প্রমান করে দেবে

© রূপেশ সামন্ত

Friday, 8 November 2024

On the Way of the Evolution of Santali Culture

 

On the Way of Evolution of Santali Culture 

In the distant past, people of the Austric language group inhabited from northern India to Easter Island of the Pacific Ocean. Their noses are broad and flat, their complexions are black and their hair is wavy. They migrated from India to Australia approximately 30-40 thousand years ago. The descendants of that Austric group are called Santal.

     The Santals have strong adherence to social customs. Their own judicial system is extraordinary. The village Panchayet is made up of five foremen. They are Manjhi, Paranik, Jag Manjhi, Godet and Naike. Pargana Panchayet is formed by adding the foremen of some village Panchayet. Its head is called Pargana. The next larger system is the Desh Panchayet. Above these three tiers of judiciary system there is the La’bir or Supreme Court.

     Santal society is basically divided into 12 sections. They are Kisku, Hansda, Murmu, Hembram, Mandi, Soren, Tudu, Baske, Bedia, Besra, Pauria and Chonre. Handia is one of the drinks in the diet chart of Santals. Handia is a favorite drink of Santals. Dhoti and turban are quite popular as the general attire of Santals. Thick sarees are quite popular as girls wear. The Santals are festive people. Two types of festivals are generally seen: birth-death-marriage oriented festival and Parban oriented festival. Santals have their own language and their own religion. But there is no scripture. Santal society is rich in endless elements of folk culture. It is true that the Santal community has been nurturing the uniqueness of their traditions for thousands of years. But their traditions have been changed and evolved in many ways due to the invasion of modernity and other communities. 

Types of Santali Marriage

 

Types of Santali Marriage

Santali marriage is called Bapla'. Santals are forbidden to marry within their same clan. In Santal society, marriage ceremony takes place in bride's house. Child marriage is not practiced in Santal society. In their society, an elder brother can never marry a younger brother's widow wife. The Santals have a custom of giving dowry to bride. This dowry is very small. The amount of this money is three rupees or seven rupees. Again there is a custom of paying sixteen or twenty one rupees.

The average age of marriage for a Santal boy is twenty and for a girl sixteen. There are seven types of marriage:

(1)   Kiring Bihu Bapla- This marriage is also called 'Duar Bapla'. If the boy is suitable for marriage, the burden of finding a bride is given to relatives and friends. The marriage is done by searching for a suitable bride and groom and negotiating a compromise. The daughter is to be brought home as a bride giving dowry.[1] The person who does this mediating work is called a Raibar or matchmaker. The matchmaker has to perform many responsibilities in the management of marriage.

(2)   Gardi Jawa Bapla - In this case, all the arrangements of marriage are made by the girl's father. He brings the boy to his house and has to stay and work for five years without pay. Then they marry and start a new married life.[1]

(3)   Kiring Jawa Bapla- In this case, the girl gets pregnant after engaging in sexual relations with a boy before marriage and neither the boy nor the girl agrees to marry. As a result, the girl inevitably has to marry another boy. In this case the first person has to bear all the dowry and other cost.[1] If the pregnant woman does not agree to disclose the name of the culprit, then a groom is required to be procured for her. If the groom is found in exchange of money and agrees to take care of the girl, they are married. If no groom is found, the future child gets Jag Manjhi's lineage.

(4)   Itut Sindur Bapla - In this case, the boy himself takes up the responsibility of marriage. If he likes a girl and doubts whether she will marry him, the boy forces the girl to wear Sindur. But in this case, a lot of inconveniences is created. In some cases, the marriage is recognized by resolution or penalty.[1]  According to social custom, once a boy puts Sindur or dust on a girl's Sinthi or forehead, then the girl is recognized as the boy's wife.

(5)   Inirbal Bapla - In this case, the girl herself takes up the matter of marriage. After living together, if the boy does not agree to marry the girl, the girl informs the Jag Manjhi of their village and he forcibly moves into the boy's house. If she can accept the torture of the boy's house and live for a while, then she has to be accepted as the wife of the house. Otherwise fine is levied.

(6)    Tunki Dipil Bapla- This type of marriage is held among the poor Santals. In this case the girl is brought to the house without any ceremony. Sindur is given to the girl.[1] The marriage ceremony is not also held at the bride's house.

(7)   Sanga Bapla- This type of marriage is for widows and divorced girls. A man marries the girl following few marriage customs. The dowry is halved in this case. Because according to Santal belief, this girl will be with her first husband again after death. And the second husband will get her only in this life.[1] There is no ceremony at this wedding. Only close relatives attend the wedding.

জীবনের ভুল — সত্যিই ভুল?

  জীবনের ভুল — সত্যিই ভুল? জীবন এক অমোঘ প্রবাহ—সময়ের স্রোতে আমাদের চিন্তা, অনুভব ও সিদ্ধান্ত সবই পরিবর্তিত হয়। আজ যা ভুল মনে হয়, কাল তা সঠি...